পশু বেচাকেনায় অতিরিক্ত হাসিল হাসিল গ্রহণ করলে কঠোর ব্যবস্থা: র‍্যাব

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৩, ০৫:৫৮ পিএম
পশু বেচাকেনায় অতিরিক্ত হাসিল হাসিল গ্রহণ করলে কঠোর ব্যবস্থা: র‍্যাব

র‌্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, কোরবানির হাটগুলোত হাসিল ঘর রয়েছে। অনেকে প্রতারিত হচ্ছেন, অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ এসেছে। হাটগুলোতে আমাদের মোবাইল টিম কাজ করছে। অতিরিক্ত হাসিল গ্রহণ করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার (২৬ জুন) দুপুরে ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে গাবতলী কুরবানির পশুর হাটে র‍্যাব কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে একথা বলেন তিনি।

কমান্ডার মঈন বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবারো আমরা কোরবানির হাটকেন্দ্রিক বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। স্বনামধন্য যে হাটগুলো রয়েছে সেখানে হাট পরিচালনা কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছি। কোরবানির হাট ও কোরবানির পশু বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে আমরা বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

তিনি বলেন, কোরবানির পশু বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম উপায়ে রাসায়নিক দ্রব্য খাইয়ে গরু মোটাতাজাকরণ করে অথবা অস্বাস্থ্যকর গবাদি পশু বিক্রি করেন। এসবের বিরুদ্ধে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায়, ভেটেরেনারি ডাক্তারের সমন্বয়ে র‍্যাব একটি টিম গঠন করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে। বিভিন্ন হাটে এই টিম পর্যবেক্ষণে যাচ্ছে।

সকাল থেকে গাবতলী হাটেও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা ১৫ জন ব্যবসায়ীকে সতর্ক করেছি। যারা 
এ ধরনের গবাদি পশু এখানে বেচাকেনা করছেন। যাদের আনা গবাদি পশু মানসম্মত নয়।

কোরবানির হাটকেন্দ্রিক দালাল অজ্ঞান পার্টি মলম পার্টি প্রতারক চক্র ও জাল টাকা কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। গতকাল রাত থেকে হাটকেন্দ্রিক অভিযানে প্রতারণা, ছিনতাইয়ে জড়িত ২০ জনকে আমরা আটক করেছি।

কমান্ডার মঈন বলেন, কোরবানির হাটকেন্দ্রিক প্রচুর টাকার নগদ লেনদেন হয়। যেখানে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী জাল টাকা নিয়ে হাটে আসেন, লেনদেনের চেষ্টা করেন। এই হাটে আমরা জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন র‍্যাব কন্ট্রোল রুমে রেখেছি। আমরা কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিনে ৫০ এর বেশি কারবারিকে আটক করেছি, যারা জাল টাকা কারবারে জড়িত। ৫০ লক্ষাধিক টাকার জাল নোট জব্দ করা হয়েছে।

সাধারণ ক্রেতা বিক্রেতাদের উদ্দেশ্যে কমান্ডার মঈন বলেন, আপনারা যারা কোরবানির পশু হাটে ক্রয়-বিক্রয় করবেন তারা নগদ লেনদেনের ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নেন, প্রয়োজনে লেনদেনের টাকা জাল কি না তা মেশিনে জাল টাকা শনাক্ত করুন। এতে করে আমরা জাল টাকা কারবারিদের আইনের আওতায় আনতে পারবো।

অনলাইনে অনেকে কোরবানির পশু কেনাবেচা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এই অনলাইনকে পশু কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে প্রতারণার শিকার না হন সেজন্য র‍্যাবের সাইবার টিম কাজ করছে। বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। যারা অনলাইনে পশু বেচাকেনায় প্রতারণা করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নারী ক্রেতা ও সাধারণ ক্রেতারা অনেক সময় ভোগান্তি হয়রানি শিকার হন, ইভটিজিংয়ের শিকার হন। কেউ প্রতারিত বা ভোগান্তির শিকার হলে র‍্যাব কন্ট্রোল রুমে অভিযোগ করুন আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

বিভিন্ন সময় কোরবানি পরবর্তী চামড়ার সঠিক মূল্য পান না প্রান্তিক কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম নির্ধারণ করেন। আমি তাদের হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, আমাদের গোয়েন্দা শাখার একাধিক টিম কাজ করছে। আমরা বেশ কিছু তথ্য ইতোমধ্যে সংগ্রহ করেছি। চামড়া বেচাকেনার সিন্ডিকেট করলে আমরা আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

ইতোমধ্যে মহাখালী ও সাভারে আমাদের গোয়েন্দা টিম অভিযান পরিচালনা করে দালালচক্রের বেশ কয়েকজন সদস্যকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, আমাদের সাইবার মনিটরিং টিম কাজ করছে। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কিছু অনলাইন পশু কেনাবেচার পেজ শনাক্ত করেছি। যারা কোরবানির পশু বেচাকেনা করেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা সরবরাহ করেননি। ঈদের এখনো দুই দিন বাকি আছে। আমরা মনিটরিং করছি। আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

হাট থেকে গরু চুরির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা গরুর হাট থেকে গরু চুরির অভিযোগ পেয়েছি। যারা এসবের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করছি। গতকাল আমরা এই গাবতলী-সাভার রোডে অভিযান পরিচালনা করে ২১ জনকে আটক করেছি। যাদের বিরুদ্ধে গরু ছিনতাই বা গরু নিয়েও টাকা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

আরএস