‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত কাজে ফিরবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
রোববার সচিবালয়ের প্রধান ফটক আটকে বিক্ষোভ চলাকালে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর এ ঘোষণা দেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়ো হতে থাকেন। ১০টা নাগাদ পুরো এলাকা বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীতে পূর্ণ হয়ে যায়। এরপর বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মো. নূরুল ইসলাম ও মহাসচিব মো. মুজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে মিছিল শুরু হয়।
মিছিলে অংশ নেওয়া কর্মচারীরা স্লোগান দেন—“সচিবালয়ের কর্মচারী এক হও, লড়াই কর”; “অবৈধ কালো আইন, মানি না মানব না”; “আমাদের দাবি মানতে হবে” ইত্যাদি।
মিছিল থেকে বলা হয়, এই অধ্যাদেশ একটি নিবর্তনমূলক আইন। এর স্টেকহোল্ডার সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেও তাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ না করেই খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে সাধারণ কর্মচারীদের অধিকার ক্ষুণ্ন হবে। খসড়া প্রত্যাহার না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। পাশাপাশি সচিবালয় অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন পরিষদের সভাপতি।
সভায় আরও বক্তারা বলেন, সরকারের অভ্যন্তরে স্বার্থান্বেষী একটি মহল এই আইনকে কাজে লাগিয়ে সুবিধা নিতে চায়, যা সাধারণ কর্মচারীদের বিপদে ফেলবে। এই অপচেষ্টা যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করা হবে।
এদিকে, মিছিল শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের নেতা ও বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, “এই কালো আইন বাতিল না করা হলে সচিবালয়ের সব প্রবেশপথ আটকে অচল করে দেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা বিভিন্ন উপদেষ্টা ও সচিবদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কিন্তু কেউ আশ্বস্ত করতে পারেননি। তাই বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নেমেছি।”
২০১৮ সালের সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের এই সংশোধিত খসড়া নিয়ে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ। তারা মনে করছেন, প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে শৃঙ্খলা ভঙ্গ, কর্তব্যে অবহেলা, অনুপস্থিতি, কিংবা উসকানির মতো অভিযোগে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সরাসরি চাকরিচ্যুতির বিধান রাখা হয়েছে, যা অন্যায়।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে এটি পর্যালোচনার জন্য চারজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ইএইচ