কৃষকদের মধ্যে পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসল উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৫, ০৭:২২ পিএম
কৃষকদের মধ্যে পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসল উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে

পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসল উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে দেশের কৃষকদের মধ্যে। তবে মানসম্পন্ন বীজের অভাব ও ধারাবাহিক কার্যক্রম না থাকার কারণে এ আগ্রহ কাঙ্ক্ষিত সুফল দিচ্ছে না। এসব সমস্যার সমাধান করা গেলে কৃষকরা আরও ব্যাপকভাবে এসব ফসল চাষে যুক্ত হবেন বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বুধবার (১৮ জুন) সকালে রাজধানীর খামারবাড়ির মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণ’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় এসব কথা উঠে আসে। আয়োজন করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) ‘পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্প’।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম। প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) মো. মাহবুবুল হক পাটওয়ারী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ডিএই-এর পরিচালক মো. আব্দুস সাত্তার ও মো. হাবিবউল্লাহ। প্রকল্প পরিচালক আ.ন.ম. আনোয়ারুল হাসান প্রকল্পের কার্যক্রম ও অগ্রগতি তুলে ধরেন।

প্রকল্প পরিচালক আ.ন.ম. আনোয়ারুল হাসান জানান, ১৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হওয়া এ প্রকল্প ২০২৩ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত চলবে। ৮ বিভাগের ৪৯ জেলার ১৫৫টি উপজেলায় এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় ১৩ হাজার ৭১৮টি ফসলের প্রদর্শনী প্লট, ১৫৫টি পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসলগ্রাম স্থাপন এবং ৭টি মিনি নিউট্রিশন ল্যাব স্থাপন করা হবে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রকল্পের আওতায় উল্লেখযোগ্য উৎপাদন হয়েছে, যেমন: ২৬৮.৬৪ মেট্রিক টন জিংক ধান, ৮৮১.৭১ মেট্রিক টন ভুট্টা, ১ হাজার ৪০২ মেট্রিক টন মিষ্টি আলু, ১ হাজার ৩৫২.০৭ মেট্রিক টন কুমড়া, ৭৩.৩৯ মেট্রিক টন চিনাবাদাম এবং ৭২.১৪৯ মেট্রিক টন ডাল জাতীয় ফসল। ২০২২-২৫ পর্যন্ত ভার্মিকম্পোস্ট উৎপাদন হয়েছে ৪৬৪.৩৫ মেট্রিক টন এবং ৬ হাজার ৩৬০ জন কৃষক প্রশিক্ষণ পেয়েছেন।

প্রধান অতিথি মাহবুবুল হক পাটওয়ারী বলেন, “কৃষি শুধু খাদ্য নয়, এখন পুষ্টির দিকেও নজর দিতে হবে। জিংক ও প্রোটিন সমৃদ্ধ জাত চাষে গুরুত্ব দিচ্ছি।” তিনি অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ওপর জোর দেন এবং মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণ তুলে ধরেন।

কর্মশালায় মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন কৃষি কর্মকর্তারা অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। গাজীপুর, রাঙামাটি, ভোলা, চাঁদপুর, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলার সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা উঠে আসে। অনেকেই যন্ত্রপাতি সরবরাহ, বাজার ব্যবস্থা উন্নয়ন, বীজের মান ও সহজলভ্যতা, সেচ ব্যবস্থা, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার সহজীকরণে গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কৃষির মাধ্যমে দেশের পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব, তবে এর জন্য প্রয়োজন কার্যকর সমন্বয়, টেকসই উদ্যোগ এবং কৃষকদের জন্য প্রযুক্তিগত ও বাজার সহায়তা।

আরএস