কালীগঞ্জে শিবমন্দিরের বেহাল দশা

  কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২২, ০৪:৫০ পিএম
কালীগঞ্জে শিবমন্দিরের বেহাল দশা

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের খামারভাতী শিব মন্দিরটি প্রায় দু'শত বছরের প্রাচীনতম একটি শিবমন্দির। এই মন্দিরটিকে ঘিরে রয়েছে অনেক ইতিহাস। 

প্রাচীন এই শিব মন্দিরটি অবহেলার কারণে তার ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছে। লোকজনের অবহেলার কারণে মন্দির প্রাঙ্গনে এখন ছাগল আর বখাটেদের অবাধ বিচরণ। 

শিব মন্দিরটি এখনও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও বর্তমানে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এখন চোখে পরে শুধু খসে পড়া সিমেন্ট ও শেওলা গজানো দেয়াল। এসব যেন দেখার কেউ নেই।

বুধবার (০৬ জুলাই) সরেজমিনে জানা গেছে, প্রায় দু'শত বছরের আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই শিবমন্দির। তৎকালীন জমিদার গোপী বল্লভ সেনেরা এই শিবমন্দিরের জমিদাতা ছিলেন। 

আর সমস্ত জমির মালিক ছিলেন তৎকালীন স্থানীয় হিন্দু জনসাধারণের আরাধ্য দেবতা স্বয়ং শ্রীশ্রী শিবদেব বিগ্রহ নিজেই। এই জমির কর ও খাজনা ছিল না। এই জমি ছিল চিরস্থায়ী দেবোত্তর এবং গোপীবল্লভ সেন গং মন্দিরটির সেবায়েত ছিলেন। 

মন্দিরটি শুরু হতেই মন্দিরে শিব বিগ্রহের যথারীতি নিত্যভোগ ও পূজাপার্বণ চালু ছিল এবং অদ্যাবধি চালু আছে। কিন্তু বর্তমানে মন্দিরটির অবস্থা খুবই শোচনীয়। মন্দিরটি অনেক পুরাতন হওয়ায় এর অবকাঠামো ভেঙে মাটিতে পরে যায়। 

বর্তমানে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায় এর পরিচর্চা করে আসছে। স্থানীয়রা এই মন্দিরে নিজ উদ্যোগে সাপ্তাহিক হরিবাসর,পূর্নিমা তিথিতে নাম সংকীর্তন এবং প্রতিবছর ফাল্গুনী শিবচতুর্দশী তিথিতে শ্রী শ্রী শিবদেব বিগ্রহের পূজা সাড়ম্বরে পালন করে। 

এই মন্দিরে তিনদিন ব্যাপী মেলা চলে। এই মেলায় বহু দুরদুরান্ত থেকে সকল সম্প্রদায়ের মানুষজনও আসে। তখন মেলাটি একটি মিলন মেলায় পরিনত হয়। কিন্তু বহুদিন ধরে মন্দিরটি জমি সংক্রান্ত বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। 

মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার রায় মন্দিরের নানা অব্যবস্থাপনার কথা স্বীকার করে বলেন, মন্দিরটি নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে, এটি নিস্পতি না হওয়া পর্যন্ত কিছু করা যাচ্ছে না। 

তিনি আরো বলেন, মন্দিরের চারপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা প্রয়োজন। সংস্কার করা না হলে ঐতিহ্যবাহী এ মন্দিরটি ধ্বংস হয়ে যাবে। কালের নিদর্শন ধরে রাখতে মন্দিরটি পুরোপুরি সংস্কার করা দরকার।

মন্দির কমিটির সভাপতি প্রহলাদ চন্দ্র রায় বলেন, এটি অতি প্রাচীনতম মন্দির,অত্র মন্দিরের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে লালমনিরহাট আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। মামলাটি নিষ্পত্তি হলেই আমরা নতুন করে আবারো  মন্দিরটি সংস্কার করে হিন্দু সম্প্রদায়ের পুরোনো এ মন্দিরটির ঐতিহ্য রক্ষা করার চেষ্টা করবো।

 আমারসংবাদ/এআই