নীলফামারীতে স্ত্রীর স্বীকৃতি চায় আলেয়া

আল-আমিন, নীলফামারী প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২২, ০২:৫৮ পিএম
নীলফামারীতে স্ত্রীর স্বীকৃতি চায় আলেয়া

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য গোলজার রহমান (৪৫) বিয়ে করেও স্ত্রীকে স্বীকৃতি না দেয়ায় তার বাড়ীতে চলে এসেছে তার বিয়ে করা স্ত্রী।

জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে পঞ্চগড় জেলা সদরের সেটেলমেন্ট অফিসে জমির রেকর্ড সংক্রান্ত কাজে যায় ওই এলাকার জগদল সর্দার পাড়ার বছির উদ্দিনের মেয়ে ৩ সন্তানের জননী আলেয়া বেগম (৩৮)। সেখানে আলেয়া বেগমের সাথে পরিচয় হয় কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও জমির পরিমাপক (আমিন) ওসমান আলীর ছেলে গোলজার রহমানের। পরিচয়ের ফাঁকে তার জমির কাজ করে দেয়ার কথা বলে আলেয়া বেগমের মোবাইল নম্বর নেয় সাবেক ইউপি সদস্য গোলজার। জমির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ধীরে ধীরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে আলেয়া ও গোলজারের মধ্যে।

আলেয়া বেগম বলেন, আমার জমিজমার কাজ নিয়ে পঞ্চগড় সেটেলমেন্টে গেলে আমার সাথে পরিচয় হয় গোলজার রহমানের। তিনি আমাকে পরিচয় দেন তিনি একজন আমিন। আমার জমির রেকর্ডের কাজ তিনি করে দিবেন বলে আমার কাছ থেকে আমার জমির কাগজগুলো নেন। সেখানে আমার মোবাইল নম্বর লিখে নেন। তিনি মাঝে মাঝে আমাকে ফোন দিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেন। আমিও তার কথায় রাজি হই। তার বউ আছে কিনা জানতে চাইলে গোলজার রহমান বলেন তার বউয়ের মাথার সমস্যা। আলেয়াকে বিয়ে করে পঞ্চগড়ে বাড়ী করে থাকবেন বলে জানায় আলেয়া বেগম।

চলতি বছরের ৮ মার্চ পঞ্চগড় নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে কোর্ট এফিডেফিটের মাধ্যমে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার একশত এক টাকা মোহরানা করে তারা দু’জনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। গোলজার রহমানের পূর্বের স্ত্রী কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ঝাকুয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। স্কুল শিক্ষিকার চোঁখ ফাঁকি দিয়ে প্রায় ৩ মাস যাবত সংসার করে আসছে সাবেক ইউপি সদস্য গোলজার রহমান। তিনি আলেয়া বেগমকে নিয়ে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্চ উপজেলায় একটি বাসা ভাড়া করে সংসার শুরু করেন। হঠাৎ করে প্রায় সপ্তাহ থেকে সাবেক ইউপি সদস্য গোলজার রহমান আলেয়া বেগমকে তালাক দেয়ার বিষয়ে উঠে পড়েন। বিষয়টি বুঝতে পেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে গোলজার রহমানের বাড়ীতে চলে আসেন তার সাথে বিয়ে হওয়া স্ত্রী আলেয়া বেগম। বাড়ীতে আসার পর গোলজার রহমান ও তার স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রীসহ আলেয়া বেগমকে বেধড়ক মারপিট করে তার মোবাইল কেড়ে নেন। এক পর্যায়ে ধস্তা ধস্তি করে আলেয়া বেগম তার মোবাইল কেড়ে নিয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে নিজের নিরাপত্তা দাবি করেন। 
খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি দু’পক্ষের মধ্যে স্থানীয় ভাবে সমাধানের চেষ্টা করলে সেখানে সাংবাদিকদের তোপের মুখে পড়ে আলেয়াকে উদ্ধার কিশোরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান।

এ ব্যাপার গোলজার রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বিবাহের কথা স্বীকার করে বলেন, আমাকে জোড়পূর্বক তারা বিয়ে দিয়েছে। এখন আমার বড় বউ আছে। নিয়ম অনুযায়ী বড় বউয়ের অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে টিকবে না।

জানতে চাইলে  কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ রাজীব কুমার রায় বলেন, দু’পক্ষের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়েছে। মহিলা থানায় অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কেএস