প্রযুক্তির আশীর্বাদে গোটা পৃথিবী হাতের মুঠো কেনা জানে। আর সেই প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় মানুষের জীবনযাত্রার মান আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। মানুষের যে কোন ইচ্ছে পূরণে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় নিমিষে পূরণ হচ্ছে। আজকের বিস্ময়কর বিশ্বে প্রযুক্তি যেন এক আলাদিনের চেরাগ। আর এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে হাজারো বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন চট্টগ্রামের শাহীন নামে এক যুবক।
তিনি শুধু বেকারত্বের মুখে হাসি ফুটাননি। একইসাথে ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়িক অবস্থান পরিবর্তন এবং মানুষের সময় বাঁচাতে ঘরে ঘরে দিয়ে আসছেন তাদের পছন্দের পণ্য। এক কথায় একজন ব্যবসায়ীকে তার পণ্য বিক্রিতে যেমন এনে দিয়েছেন সহজতা এবং বৃদ্ধি করেছেন বিক্রয়।
অন্যদিকে ভোক্তা বিনা পরিশ্রমে কোন ঝামেলা না পোহিয়ে মেটাতে পারছেন তার যেকোনো চাহিদা, যাকে এক কথায় অনলাইনে পণ্য বেচাকেনার হাট বলা চলে। শুধুমাত্র একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিক্রেতা তার পণ্য বিক্রয় করছে ক্রেতা তার পছন্দের পণ্য ক্রয় করছে এবং বিক্রেতা ক্রেতার মাঝখানে পণ্যের প্রসার ঘটাচ্ছে সেল্ফ ডিজিটাল বিজনেস প্লাটফরম, যা সেল্ফ এমপ্লয়মেন্টস টেকনোলজিস লিমিটেড নামে পরিচিত।
আর সেল্ফ ডিজিটাল বিজনেস প্লাটফর্মের মাধ্যমে বিক্রেতার পণ্যগুলো বাজার জাতকরণ এবং ক্রেতার কাছে পছন্দনীয় হিসেবে প্রদর্শন সহ পৌঁছে দেওয়া ইত্যাদি কাজগুলো করছে সেল্ফ ডিজিটাল বিজনেস প্লাটফর্ম বা সেল্ফ এমপ্লয়মেন্টস টেকনোলজিস লিমিটেডে যুক্ত থাকা বিক্রয় কর্মীরা।
আর তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তুলছেন সেল্ফ এমপ্লয়মেন্টস টেকনোলজিস লিমিটেড। এসব বিক্রয় কর্মীরা একটিমাত্র মোবাইল বা ল্যাপটপের মাধ্যমে আয় করছেন ৩০ হাজার থেকে লাখ টাকা। যেহেতু এটি নির্দিষ্ট একটি চাকরি নয়। সম্পূর্ণ বিনা পুঁজিতে প্রযুক্তি মাধ্যম একটি ব্যবসা।
এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় সেল্ফ এমপ্লয়মেন্টস টেকনোলজিস লিমিটেডের পরিচাল বিক্রয় কর্মী ও ভোক্তাদের সাথে। প্রত্যেকের অবস্থান থেকে প্রত্যেকে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। কারণ দেশের যে কোন প্রান্তে থেকে যে কোন ব্যবসায়ী ব্যবসা করতে পারছেন এবং ভোক্তা তার পছন্দের পণ্য শত শত মাইল দূরে হলেও হাতের নাগালে নিয়ে আসতে পারছেন।
চট্টগ্রামের ইউনিক শপিং, ঢাকার অল ইন ওয়ান, বাগেরহাটের রহমান এক্সপ্রেস, চট্টগ্রামের হাটহাজারীর প্রিয়জন শপিং সিলেটের ফ্যান্টাসি শপ ঢাকার গিভ এন্ড টেক চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার কুইক বাই এবং সন্দীপের মৌমাছি ডট কম তারা বলেন , সেল্ফ এমপ্লয়মেন্টস টেকনোলজিস লিমিটেডের মাধ্যমে তাদের ৩০ ভাগ বিক্রি বেশি হয়। এতে তারা ব্যবসায়িকভাবে উপকৃত হচ্ছেন এবং তাদের প্রতিষ্ঠান ব্যাপক পরিচিত লাভ করছেন।
বেকারত্বকে দূর করে নিজেদের ভাগ্য বদলানো দিদারুল আলম বলেন, পড়াশুনা করে চাকরিও জোটছে না এবং পুঁজির অভাবে ব্যবসা করতে পারছিলামনা। ঘরে সবার বড়। বাবা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে আছে। ছুটাছুটি করছি একটি চাকরির আশায়। অবশেষে সন্ধান পেলাম এ প্রতিষ্ঠানের। প্রথম প্রথম একটু হতাশ ছিলাম। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর যখন কাজ শুরু করি আলহামদুলিল্লাহ ভালো সাড়া পেয়েছিলাম। ধীরে ধীরে আয় বাড়তে থাকলো। বর্তমানে আমার প্রতি মাসে আয় হয় লাখের উপরে।
তার মতে বেকারত্ব থেকে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উপার্জন করে সংসারের অভাব দূর করে সুখে শান্তিতে আছেন বলে জানান রাউজানের মো:সোহেল ফটিকছড়ি রুশনি আক্তার সৌরভ মন্ডল মুনসুর আলম আবু রায়হান ও জি,এম আশিক আরো অনেকে।
ভোক্তা রুজি আক্তার বলেন, তার ঘরে শ্বশুর-শাশুড়ি ও ছোট শিশুদের দেখভাল করে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে যাওয়ার সময় সুযোগ হয়ে ওঠে না। এতে সঠিক সময়ে প্রয়োজন মেটাতে অনলাইনের মাধ্যমে তাদের অর্ডার দিয়ে পণ্য পেয়ে থাকি। প্রথমে প্রতারণার একটি ভয় ছিল। তবে প্রথম ডেলিভারিতে যথাসময়ে সঠিক পণ্য পাওয়াতে ভয় কেটে যায়। তার মতে অনলাইনে কেনাকাটায় এই প্রতিষ্ঠানের মত বিশ্বাস স্থাপন করতে পারলে মানুষের জীবনযাত্রা আরও সহজ হয়ে উঠবে।
সেল্ফ এমপ্লয়মেন্টস টেকনোলজিস লিমিটেডের পরিচালক শাহাদাত হোসেন শাহীন বলেন, স্বল্পশিক্ষিত থেকে শুরু করে শিক্ষিত যে কোন জন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে আমাদের প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হতে পারেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা তাদেরকে প্রযুক্তির উপর দক্ষ করে গড়ে তুলি। একইভাবে ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায় কেনাবেচা বৃদ্ধির জন্য যুক্ত হতে পারেন। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির কোন বিকল্প নেই। নিজের মেধাকে প্রযুক্তিতে কাজে লাগিয়ে পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
তিনি আরো বলেন, সেল্ফ হচ্ছে দেশের নাম্বার-১ রিসেলিং প্লাটফর্ম। এখানে বিক্রেতা, রিসেলার এবং ভোক্তা প্রত্যেকেই উপকৃত হচ্ছে। বিক্রেতা এখানে ভেন্ডর হিসেবে পরিচিত। এখানে ভেন্ডররা সাধারণত ইম্পোর্টার বা পাইকারী বিক্রেতা হয়ে থাকে। ভেন্ডররা তাদের পণ্য গুলো সেল্ফ মার্কেটপ্লেসে রাখে এবং পাইকারী মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। আর সেল্ফ এর রিসেলাররা ভেন্ডরদের এই প্রোডাক্টগুলো মার্কেটিং করে ভোক্তার কাছে বিক্রি করে। ফলে ভেন্ডররা কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই তাদের প্রোডাক্ট এর নিয়মিত অর্ডার পান এবং রিসেলাররা রিসেলিং করে মধ্যস্বত্বভোগী হিসেবে একটি ভালো পরিমাণ আয় করে নিতে পারেন। এতে ভেন্ডর, রিসেলার উভয়ের উপার্জন তথা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে সেল্ফ।
অন্যদিকে সাধারণ ভোক্তা যাতে কোনোভাবে প্রতারিত না হয় অর্থাৎ সঠিক পণ্য সাধারণ ভোক্তার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য সেল্ফ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে ভোক্তার হাতে পণ্য পৌছানোর পর ভোক্তা সঠিক পণ্য পেয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করার পর অর্ডার সম্পন্ন করা হয়। অন্যথায় ভোক্তা ১০০ শতাংশ পণ্য রিটার্ন করে দিতে পারেন। ফলে, কোনো ভেন্ডর ইচ্ছা করলেও সঠিক প্রোডাক্ট না দিয়ে গ্রাহককে ঠকানোর কোনো সুযোগ সেল্ফে নেই।
এআই
আমার সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
