ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানের মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৩, ০২:৩২ পিএম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানের মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানার পরিদর্শকসহ ১৭ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে রোববার (১২ মার্চ) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ শারমীন নিগারের আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়। আদেশের জন্য আগামী বুধবার (১৫ মার্চ) পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।

চেয়ারম্যানের মামলায় আসামীরা হলেন, সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শেহাবুর রহমান, উপ-পরিদর্শক (এস.আই) মো. জয়নাল আবেদীন, উপ-পরিদর্শক পঙ্কজ দাশ, সহকারী উপ-পরিদর্শক দিলীপ কুমার নাথ ও জেলা গোয়েন্দা বিভাগের এক উপ-পরিদর্শকসহ সরাইল থানা ও ডিবির অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জন পুলিশ সদস্য। মামলায় তাদের সকলের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মামলায় উল্লেখ করেন, ২ ফেব্রুয়ারি তার নিজের ইউনিয়নের সীতাহরণ গ্রামের মো. হারিছ মিয়া ও সোলায়মান মিয়ার লোকজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এই বিষয়ে তিনি পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা চেষ্টাকালে ৩ ফেব্রুয়ারি দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়ালে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই মধ্যে এক পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি মিমাংসার জন্য চেয়ারম্যানকে বলেন। সন্ধ্যায় একাধিক পিকআপে এবং ৫-৭টি মোটরসাইকেলযোগে সরাইল থানা পুলিশ এবং জেলা গোয়েন্দা বিভাগের কিছু সদস্য সীতাহরণ বাজারে গিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। তারা স্থানীয় লোকজনকে সরিয়ে দিয়ে অতর্কিতভাবে চেয়ারম্যানকে মারধর শুরু করে।

এ সময় তিনি নিজেকে ইউপি চেয়ারম্যান পরিচয় দেওয়ার পর পরিদর্শক শেহাবুর রহামন এবং উপ-পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে বলেন, এলাকায় ঝগড়া বিবাদ হলে কেন চেয়ারম্যান সালিশে মিমাংসা করে ফেলেন। এছাড়া থানায় কোন মামলা হতে দেন না উল্লেখ করে চেয়ারম্যানকে মারধর করে এক পর্যায়ে পিকআপ ভ্যানে উঠিয়ে সরাইল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় সাবেক ইউপি মেম্বারসহ পাঁচজনকে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে এবং পরদিন তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আদালতে পাঠান।

অপরদিকে খবর পেয়ে পানিশ্বর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. তৌহিদ মিয়া ও ইউপি সদস্য ইমান আলী উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারি বাসা থেকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাফিজকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। পুলিশের ভয়ে তিনি হাসপাতালে না গিয়ে বাসায় চিকিৎসা নেন। ঘটনার পরদিন ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি পুলিশ সুপার বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তবে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে তার অভিযোগ গ্রহণ না করায় গত ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি সেটি ডাকযোগে পাঠান।

এ বিষয়ে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, ‍‍`মামতো-ফুফাতো ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের জের ধরে ঝগড়া হলে কয়েকজনের সাথে ইউপি চেয়ারম্যানকেও আটক করা হয়। তবে চেয়ারম্যানের উপর শারীরিকভাবে কোনোরকম নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি।‍‍`

আরএস