চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিপুল পরিমাণ মাদক ধ্বংস

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩টি বিজিবি ব্যাটালিয়নের অভিযানে আটক হওয়া কোটি কোটি টাকামূল্যের বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর কল্যাণপুরে এইসব মাদক ধ্বংস করা হয়।

এ উপলক্ষে আয়েজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন, রংপুর উত্তর-পরিশ্চম রিজিওয়ান কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বেনজীর আহমেদ।

তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, মাদকদ্রব্য চোরাচালান বন্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণের জন্য আমাদের বলা হয়েছে। আমরা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি সেই নীতি অনুসরণ করে মাদক চোরাচালান বন্ধে করেছি। আমরা চেষ্টা করছি পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যে মাদক আসছে তা বন্ধ করার।

রাজশাহী সেক্টর কমান্ডারের বক্তব্যের সূত্র ধরে তিনি বলেন, সারাদেশে ৫৯টি বিজিবি ব্যাটালিয়ন রয়েছে। সারাবছরে যদি এক হাজার কোটি টাকার মতো মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হয় তাহলে ভাবুন তো আমাদের অর্থনীতি থেকে প্রতিবছর কতো টাকা নষ্ট হয়ে যা্েচ্ছ? মাদকের পেছনে খরচ করা এই টাকা আমাদের দেশের অর্থনীতিতে কোনো অবদান রাখতে পারছেনা।

তিনি বলেন- একটি বিওপিতে ১২ জন লোক থাকে। এই লোক দিয়ে কি সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ করা সম্ভব? তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে সীমান্ত এলাকায় বসবাসারী জনসাধারণের জীবন ধারনে আমরা যদি অবদান রাখতে পারি, তাদেরকে যদি আর্থ-সামাজিকভাবে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে পারি তাহলে তারা মাদক চোরাচালানের দিকে ঝুঁকে পড়বে না। মাদক চোরাচালান বন্ধে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রেরও ভূমিকা রয়েছে। মাদকবিরোধী সংবাদগুলো প্রথম পাতায় ছাপা হলে মানুষের দৃষ্টিগোচর হবে। তিনি মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. আনোয়ার লতিফ খান। সুচনা বক্তব্য দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (৫৩ বিজিবি) এর অধিনায়ক মো. নাহিদ হোসেন। অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপপরিচালক মোহাম্ম আনিছুর রহমান খাঁন।

অনুষ্ঠানে বিজিবি কর্মকর্তা, র‌্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। 

পরে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি হতে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজশাহী ব্যাটালিয়ন (১বিজিবি)’র, ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (৫৩ বিজিবি)’র এবং  ১ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রহনপুর ব্যাটালিয়ন (৫৯ বিজিবি)’র অভিযানে আটক হওয়া বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হয়।

ধ্বংস করা মাদকের মধ্যে ছিল, ২ হাজার ৩২১ বোতল বিদেশি মদ, ১ হাজার ৭৪৫ দশমিক ৭৫০ লিটার দেশি মদ, ১৪০ দশমিক ৩শ লিটার মদ তৈরির উপকরণ, ১ লাখ ২১ হাজার ৫৯৫ বোতল ফেনসিডিল, ৪০৭ কেজি ২৪৯ গ্রাম গাঁজা, ১৫২ কেজি ৫৪৪ গ্রাম হেরোইন, ৬ লাখ ৪৩ হাজার ৪৩৭ পিস ইয়াবা,  অনাগ্রা ট্যাবলেট ১৯৮ পিস, সানাগ্রা ট্যাবলেট ৬৪ পিস, ভায়াগ্রা ট্যাবলেট ১ হাজার ৮৫০ পিস, ২ লাখ ৮ হাজার ৩৭৮ প্যাকেট পাতার বিড়ি, ৯০৫ দশমিক ২৭০ কেজি পাতার বিড়ির গুড়া, ৭৮৩ কেজি বিড়ির মসলা, ১ হাজার ৩৫৩ কেজি বিড়ির পাতা, ৫০৫ বোতল নেশা জাতীয় সিরাপ, ৮ হাজার ৬৩৪টি নেশা জাতীয় ইঞ্জেকশন।

এআরএস