মানিকগঞ্জে জেলা বদলীর আবেদন এখনো পড়ে আছে উপজেলাতেই

মেহেদী হাসান মাসুদ, বালিয়াকান্দী রাজবাড়ী: প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৩, ০৩:৪৭ পিএম
মানিকগঞ্জে জেলা বদলীর আবেদন এখনো পড়ে আছে উপজেলাতেই

দীর্ঘদিন বদলী বন্ধ থাকার পর অনলাইনে বদলী চালু হলেও সফটওয়্যারের নানা তালবাহানায় আবেদন করেও বদলী হতে পারেননি অনেক শিক্ষক। সম্প্রতি আন্ত: জেলা বদলীর আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হলেও মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার বহু শিক্ষকের অনলাইন আবেদন অগ্রায়নই করা হয়নি। 

শিক্ষকদের অভিযোগ উপজেলা শিক্ষা অফিসারের গাফিলতিতে তাদের আবেদন উপজেলাতেই রয়েছে গেছে, ফলে তারা বদলী হতে পারলেন না। 

শিক্ষা অফিসার বলছেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও সুরাহা হয়নি। এরই মধ্যে জেলা বদলী ইস্যু শেষ হয়ে আন্ত: বিভাগ বদলী চালু হয়েছে।

অভিযুক্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর ফিরোজ, গত ফেব্রুয়ারী মাসের ০৫ তারিখে দৌলতপুর উপজেলায় যোগদান করেন। শিক্ষা অফিসারের দাবী তিনি একাজে মোটেও অবহেলা করেননি। মূলত আইডি পাসওয়ার্ড সমস্যার কারনে অগ্রায়ন করতে পারেননি।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, ১৩ মার্চ, ২৩ তারিখের বদলী সর্ম্পকিত পত্রে সহকারী শিক্ষক/প্রধান শিক্ষকগণের একই বিভাগের মধ্যে আন্ত: জেলা বদলী চালু হয়। যা ১৪ মার্চ, ২০২৩ হতে ১৫ মার্চ, ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত শিক্ষকগণ অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ পান। ১৬-১৮ মার্চ পর্যন্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার, ১৯-২০ মার্চ পর্যন্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবং ২১-২২ তারিখ পর্যন্ত বিভাগীয় উপপরিচালকগণ অনলাইনে বদলী সর্ম্পকিত প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করবেন।

মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২৩ জন শিক্ষক অন্য জেলায় বদলীর জন্য আবেদন করেছিলেন। অন্য জেলায় বদলীর আবেদন করেছেন এমন ৬ জন শিক্ষককের সাথে কথা হয়। তারা কেউ স্বামীর স্থায়ী ঠিকানায় আবার কেউ স্বামীর কর্মস্থল বদলীর জন্য আবেদন করেছিলেন। তারা বলেন, স্বামী-সন্তান থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছি। বছরের পর বছর বদলী হতে চেষ্টা করছি। অবশেষে গত ১৪ তারিখে কাংখিত স্থানে বদলীর আবেদন করলেও উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবেদনগুলো অগ্রায়ন করেননি। তারা শিক্ষা অফিসারের শাস্তি দাবী করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক বলেন, ৭-৮ বছর যাবত বিয়ে হলেও পিতার বাড়ীতে থেকে চাকুরী করতে হচ্ছে। বদলী হতে না পারায় স্বামীর স্থায়ী ঠিকানায় যেতে পারছিনা। যদিও বদলী চালু হলো কিন্তু শিক্ষা অফিসারের গাফিলতিতে আবেদন অগ্রায়নই হয়নি।

সম্প্রতি বিভাগ বদলীর আবেদন শুরু হয়েছে। ২৬ মার্চ, ২০২৩ থেকে ২৮ মার্চ, ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত আন্ত: বিভাগ (সিটি কর্পোরেশন ব্যতীত) অনলাইনে বদলীর আবেদন করা যাবে। বদলী প্রত্যাশিত শিক্ষকরা যে কোন তিনটি বিদ্যালয় পছন্দ ক্রমানুসারে পছন্দ করবেন। এরপর ২৯ মার্চ তারিখের মধ্যে উপজেলা শিক্ষা অফিসার, ৩০ মার্চ তারিখের মধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবং ৩১ তারিখের মধ্যে বিভাগীয় উপ-পরিচালক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।

দৌলতপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর ফিরোজ বলেন, গত ফেব্রæয়ারী মাসের ০৫ তারিখে এ উপজেলায় যোগদান করেছি। আমার আইডি পাসওয়ার্ড পাওয়ার জন্য আমি ২৩ ফেব্রæয়ারী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইএমডি শাখায় পত্র দিয়েছি। ২৩ জন শিক্ষক অন্য জেলায় বদলীর জন্য আবেদন করেছিলেন। একাধিকবার যোগাযোগ করেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে সময়মতো আমার আইডি পাসওয়ার্ড পাইনি। এ বিষয়ে পত্রও দেয়া হয়েছে। মূলত এটা কয়েক মিনিটের কাজ। আইএমডি শাখায় কার সাথে যোগাযোগ করেছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি সিনিয়র সিস্টেম এনালিষ্ট প্রকৌ: অনুজ কুমার রায়ের কথা বলেন।

প্রকৌ: অনুজ কুমার রায় বলেন, আইডি পাসওয়ার্ড কি আমি দিই? যাদের আইডি পাসওয়ার্ড তাদের’ বলে সংযোগটি কেটে দেন।

মানিকগঞ্জ সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, আইডি পাসওয়ার্ড সংক্রান্ত সমস্যার কারণে দৌলতপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার জেলা বদলীর আবেদন অগ্রায়ন করতে পারেনি বিধায় আমরাও আবেদনগুলো পাইনি। বর্তমানে আইডি পাসওয়ার্ড পেয়েছে কিন্তু সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় আবেদনগুলো সেভাবেই পড়ে আছে।

আরএস