তেঁতুলিয়ায় পর্যটকদের মুগ্ধতা কাঁড়ছে হলুদিয়া সূর্যমুখী

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২৩, ০৫:৩১ পিএম
তেঁতুলিয়ায় পর্যটকদের মুগ্ধতা কাঁড়ছে হলুদিয়া সূর্যমুখী

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সবুজ পাতার ভেদ করে মাথা উচু করে সৌন্দর্যের আভা ছড়িয়ে পর্যটকদের মুগ্ধতা কাঁড়ছে মিষ্টি হলুদের সূর্যমুখী। বাতাসে দোলে নজর কাঁড়ছে ফুলগুলো। তা দেখতে অনেক দর্শনার্থীদের ভিড় জমছে সেখানে। অনেকে পরিবার নিয়ে চোখ জুড়িয়ে দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। 

সমতলের সবুজ চা বাগানের পর সূর্যমুখীর আবাদ বেড়েছে তেঁতুলিয়ায়। এতে একদিকে যেমন তেল উৎপাদনের সম্ভাবনা বাড়ছে। তেমনি পর্যটনে বাড়িয়ে দিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঈদ কিংবা সারা বছরই অগণিত পর্যটকের সমাগম ঘটে তেঁতুলিয়ায়। তেঁতুলিয়ার নানান নয়নাভিরাম দর্শনীয় স্থানের সাথে যুক্ত হচ্ছে সূর্যমুখী বাগানও। 

তেঁতুলিয়ার সদর এলাকার বাংলাবান্ধা-পঞ্চগড় এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের বাংলাটি কারখানার ধারেই পঞ্চাশ শতক জমিতে আফজাল হোসেন চাষ করেছেন সূর্যমুখী। মহাসড়কের ধারে থাকায় সৌন্দর্য পিপাসুরা দেখতে যাচ্ছেন বাগান দেখতে। কেউ পরিবার নিয়ে, কেউ বন্ধু-বান্ধব নিয়ে। নবদম্পতি, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে বাগানটি। 

দর্শনার্থী মাইদুল-আরজু দম্পতি জানান, মহাসড়কের ধারে সূর্যমুখী বাগান, ভাবাই যায় না। খুব ভালো লাগছে সূর্যমুখী ফুলের আভা উপভোগ করতে পেরে। যদি এই মহাসড়কের ধারে আরও বেশি জমিতে এ ফুল চাষ করা যায় তাহলে একদিকে যেমন পর্যটনের গুরুত্ব বাড়বে তেমনি তেল উৎপাদনে কৃষকরাও লাভবান হবেন। 

সূর্যমুখী চাষী আফজাল হোসেন জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে ৫০ শতক জমিতে প্রথমবার সূর্যমুখী আবাদ করেছি। প্রথমবারেই আবাদে ভালো ফলন দেখে খুব ভালো লাগছে। বিশেষ করে আমি এমনিতে পর্যটন বিষয় নিয়ে খুব ভাবি। 

এ ভাবনা থেকেও এশিয়ান সড়কের ধারে ৫০ শতক জমিতে আবাদ করা সূর্যমুখী পর্যটকদের আনাগোন আমাকে অনুপ্রাণিত করছে। অনেক পর্যটক এসে ছবি তুলছেন। এটা দেখে খুব ভালো লাগছে। আশা আছে আগামী বছর আরও বেশি জমিতে এই সূর্যমুখী চাষ করবো। বিকল্প ফুলও আবাদের পরিকল্পনা রয়েছে। 

কৃষি স¤প্রসারণ অফিসের তথ্যমতে, তেঁতুলিয়ায় এবার ২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। ক্রমাগতভাবে বাড়ছে সুর্যমুখী চাষ। স্থানীয় কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছে। ইতিমধ্যে কিছু কাটা হয়ে গেছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রতি বছর বিদেশ থেকে প্রচুর পরিমানে সূর্যমুখীর তেল আমদানি করা হয়। অথচ আমাদের দেশ এই ফুল চাষের জন্য উর্বর ক্ষেত্র। এই ফুলের আবাদও সহজ, তেল আহরণ করাও কঠিন কিছু না। সূর্যমুখীর বীজে ৪০ হতে ৪৫ শতাংশ তেল বিদ্যমান। 

তাই কৃষকদের মাঝে এর আবাদ ছড়িয়ে দিতে পারলে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। সূর্যমুখীর তেল ক্যান্সার, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ অনেক রোগের ক্ষেত্রে খুব উপকারী। তাই বিদেশে এই তেলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। 

মূলত তেলের ঘাটতি মেটাতে এই ফুলের চাষ করা হয়েছে। পাশাপাশি তেঁতুলিয়া পর্যটন অঞ্চল হিসেবে টিউলিপের মতো সূর্যমুখী ফুল পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পারে। আমরা কৃষকদের পাশে থেকে এই ফুল চাষের আবাদে উৎসাহ ও পরামর্শ দিচ্ছি। 

এইচআর