১০ গ্রাম প্লাবিত

চাষির স্বপ্ন পানির নিচে

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২৩, ০৫:২৭ পিএম
চাষির স্বপ্ন পানির নিচে

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নে তিস্তা নদীর বন্যায় ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী ও দেড় হাজার কৃষকের আমন ধান ক্ষেত নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

সোমবার বিকেল থেকে সন্ধা পর্যন্ত দহগ্রামের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এ ইউনিয়ন হয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকা ১, ৪, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বেশকিছু অংশের বসতবাড়ি, রোপা-আমন ধান ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়ে রয়েছে।

এতে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এবারসহ দুই দফা বন্যায় রোপাআমন ধান ক্ষেত নিমজ্জিত হওয়ায় এ ইউনিয়নের প্রায় দেড় হাজার কৃষকের ৪ শত হেক্টর ধান ক্ষেত নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।  আকস্মিকভাবে কয়েকদফা বন্যা দেখা দেয় এ এলাকায়।

বন্যার পানি নেমে গেলেও গত ১০ এবং ২৭ আগস্ট বন্যার পানিতে কয়েকদিন ফসলি ক্ষেত ডুবে থাকে। এ কারনে রোপাআমন ধান গাছে পঁচন ধরতে শুরু করেছে বলে জানায় স্থানীয় কৃষকেরা।    

স্থানীয়রা জানায়, গত ৩ থেকে চার দিনে তিস্তা নদীর পানি বেশ কয়েকবার কমে ও বৃদ্ধি পায়। সোমবার বন্যায় এ ইউনিয়নের ১, ৪ ও ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ড অংশের অন্তত ১০ টি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এলাকা গুলো হলো-মুন্সিপাড়া,  সৈয়দপাড়া, কাতিপাড়া, গুচ্ছগ্রাম, মহিমপাড়া, বড়বাড়ি, নতুনহাট, হাড়িপাড়া, কলোনিপাড়া ও সর্দারপাড়া।

দহগ্রাম ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কবিরন নেছা (৫০) বলেন, ‘বন্যায় বাড়ি-ঘরে পানি। খাওয়া-দাওয়ার খুব সমস্যা হচ্ছে। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে আছি‍‍` দহগ্রাম ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়া এলাকার কৃষক আব্বাছ আলী (৪৫) বলেন, ‘তিস্তা নদীর পানি কমে ৬ ঘন্টা বাড়ে ১২ ঘন্টা এভাবে গত কয়েকদিন ধরে চলেছে। আমার ৩ বিঘা জমির আমন ধান ক্ষেত শেষ। এবারে বহু কৃষকের ধান আবাদ বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে।’   

পাটগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল গাফ্ফার জানান, ‘বন্যায় দহগ্রামের একই  এলাকায় বার বার পানি ঢুকছে। এতে ওই এলাকা গুলোর প্রায় দেড় হাজার কৃষকের ৪ শ হেক্টর আমন ক্ষেত বন্যার পানিতে নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

সোমবার (২৮ আগস্ট) দহগ্রামের বিভিন্ন এলাকার বন্যায় ডুবে থাকা ধান ক্ষেত ঘুরে দেখেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান। এ সময় তিনি কৃষকদের সাথে কথা বলেন। প্রয়োজনীয় তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সরবরাহ করা হয়েছে।’  

দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ তিস্তায় পানি বারলেই দহগ্রামে বন্যা হয়। এতে ফসলি জমি, বসতবাড়ি, রাস্তা, সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিস্তা নদীতে যে বাঁধ হচ্ছে সেটি উচু করে বেরি বাধ নির্মাণ করতে হবে। না হলে বন্যায় প্রতিবছর ক্ষতি হতেই থাকবে।’  

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হক বলেন, ‘বন্যায় পানিবন্দী ১ হাজার পরিবারের মাঝে সোমবার (২৮ আগস্ট) ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। আমন ধানক্ষেত ক্ষতিগ্রস্তের ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে তথ্য সংগ্রহ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে।’

এইচআর