আশ্রয়ণের ঘরে বদলেছে হতদরিদ্রদের জীবনমান

জাহাঙ্গীর আলম জাবির, বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৩, ১১:৫০ এএম
আশ্রয়ণের ঘরে বদলেছে হতদরিদ্রদের জীবনমান

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে বদলে গেছে ১৯৩ পরিবারের প্রায় ৫০০ জন হতদরিদ্র মানুষের জীবনমান। যে মানুষগুলোর এক সময় ছিল না কোন স্থায়ী  ঠিকানা। খাস জমি অথবা অন্যের জমির উপর ঘর করে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করত। আজ তারা নিজস্ব ঠিকানা, স্থায়ী নিবাসে বাস করছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না স্লোগানে বুড়িচং উপজেলায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায় মোট ১৯৩ টি আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করে উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা সদর, বাকশীমূল, ষোলনল ও মোকাম  ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে প্রকল্পের আওতায় ৪ কোটি ৫৯ লাখ  ৯ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে এসব ঘর নির্মাণ করা হয়।

উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের আনন্দপুর আশ্রয়ণ ৫৩ নং ঘরের বাসিন্দা  আজেদা বেগম (৫৫) বলেন, আগে ছোট ভাঙা ঘরে সন্তান নিয়ে শীত-বৃষ্টির সঙ্গে লড়াই করে অন্যের জমিতে থেকেছি, এখন সরকার নতুন ঘর দেওয়ায় পরিবার নিয়ে নিজের ঘরে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছি।

৩নং ঘরের বাসিন্দা পেয়ারা (৫০) বলেন, শেষ বয়সে সরকারের জমিসহ পাকা ঘর পেয়ে অনেক ভালো আছি। আরেক বাসিন্দা মো রফিকুল ইসলাম বলেন, পাকা ঘরে থাকবো কখনো কল্পনা করিনি। প্রধানমন্ত্রী ঘরসহ জমিও দিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ। তবে, আমাদের জন্য পুকুর, নিজস্ব কবরস্থানের ব্যবস্থা করলে ভালো হয়।

তাছলিমা আক্তার (৩১) বলেন, আমরা অনেক খুশি শেখ হাসিনা আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই  করে দিয়েছেন। ১৫ নং ঘরের বাসিন্দা তানিয়া আক্তার (২৬) বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের ঘর ও জমি দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে যদি আমাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতেন আরো ভালো হতো।

অন্যান্য উপকারভোগীরা জানান, এখানে শাক-সবজি চাষের জন্য জমি আছে, সাথে মাছ চাষের জন্য পুকুর থাকলে আরো ভালো হতো।

বিভিন্ন আশ্রয়ণ ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেক আশ্রয়ণে  রয়েছে বিদ্যুৎসংযোগ, বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির ব্যবস্থা। এছাড়া রয়েছে পাকা টয়লেট। তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা এবং ময়লা ফেলার ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গদের সহযোগিতা কামনা করেন তারা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মোস্তফা মাইদুল মোর্শেদ মুরাদ বলেন, স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের সহায়তায় দেওয়া হয়েছে এসব ঘরগুলো। আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। ঘরগুলো গুণগত মান বজায় রেখে নির্মাণ করা হয়েছে।  জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রত্যেক কার্যক্রম নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার বলেন, এ প্রকল্প পৃথিবীতে একটি রোড মডেল। কারণ, এভাবে কোন দেশে আশ্রয়হীনদের জন্য সরকারিভাবে নিরাপদ পাকা ঘর তৈরি করা হয়নি। যা একমাত্র বাংলাদেশেই হয়েছে। আমরা বরাদ্দ অনুযায়ী কাজের গুণগত মান বজায় রেখে টেকসই ঘর তৈরি করেছি। ঘরগুলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় দরিদ্র, অসহায় গৃহহীনদের মাঝে স্বচ্ছ তালিকা তৈরি করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্দ দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের এমন একটি ভালো কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ায় আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

এআরএস