মাছ ধরতে মানা, জেলে পল্লীতে হাহাকার

জসিম উদ্দিন, তালতলী (বরগুনা) প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৩, ০৩:১০ পিএম
মাছ ধরতে মানা, জেলে পল্লীতে হাহাকার

সারা বছরের খরা কাটিয়ে বরগুনার তালতলীর উপকূলীয় জেলেদের জালে ইলিশের দেখা মেলা মাত্রই শুরু হচ্ছে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এদিকে ইলিশ আহরণের মৌসুম প্রায় শেষ। কিন্তু ভরা মৌসুমের শেষ মুহূর্তেও উপকূলে ইলিশের নাগাল না পেয়ে হতাশ এ উপজেলার কয়েক হাজার জেলে। নিষেধাজ্ঞার সময় কীভাবে সংসার চলবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়ছে জেলেদের কপালে।

জানা যায়, আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে। এ উপজেলায় সরকারী ভাবে নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ৮ হাজার ৮’শ ৯৩ জন। ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ভেতরে থাকা ৬ হাজার ৫শ ৫৪ জন জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। ২২ দিনে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া অপ্রতুল খাদ্য সহায়তা নিয়েও রয়েছে জেলেদের ক্ষোভ। এ জন্য নগদ অর্থ দেওয়ার দাবি জেলেদের। এছাড়াও ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইলিশের তেমন নাগাল পাচ্ছেন না জেলেরা।

উপজেলার ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, শেষ মুহূর্তে সময় নষ্ট না করে দিনরাত এক করে ট্রলারে জাল তুলে আনছেন ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ। বেচাকেনার ধুম পড়েছে মৎস্য ঘাটে ।জেলেদের সাথে কথা বললে তারা তাদের ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শুরুর খবরে আবার হতাশার কথা জানিয়েছেন।

স্থানীয় একাধিক জেলে জানান, আগামী ২২ দিন ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার থেকে তারা বিরত থাকবেন। কিন্তু বিকল্প কোনো কর্মসংস্থান না থাকায় তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হবে। এ ছাড়াও মহাজনের দেনা আর এনজিওর ঋণের কিস্তি নিয়ে তাদের দুচিন্তার শেষ নেই। তারা আরও বলেন, সরকারী ভাবে মাত্র ২৫ কেজি চাল তাতে জেলেদের কিছুই হয় না।

ফকিহাট ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবর ফরাজী বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগেই জেলেদের সরকারি সহায়তা দেয়ার দাবি থাকলেও এখনও তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞার এ সুযোগে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে মাছ শিকার করবে প্রতিবেশী ভারতের জেলেরা, যা দেশের জেলে ও মৎস্য ব্যবসাকে ধ্বংস করে দেবে। এ জন্য ভারতের জেলেরা যাতে মাছ শিকার করতে না পারে সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন।

তালতলী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বলেন, আগামী ২২ দিনের অভিযান সফল করার জন্য ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নিবন্ধিত সমুদ্রগামী যেসব জেলে রয়েছেন তাদের নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে নিবন্ধিত প্রতিজন জেলে ২৫ কেজি করে বিশেষ ভিজিএফ চাল পাবেন।

এআরএস