মানিকগঞ্জ শিবালয় উপজেলার দক্ষিণ সাকরাইল, কয়রা ও ফেচুয়াধারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ওয়াস ব্লক তৈরীর অভিযোগ উঠেছে মেসার্স দোয়েল হেলথ ওয়াটার এন্ড সেনিটেশনের মালিক এবিএম সামছুন্নবী তুলিপের বিরুদ্ধে।
জনস্বাস্থ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ জুন থেকে এক বছরের মধ্যে তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৪১ লাখ টাকার টপ ওয়াশ ব্লক তৈরির কাজ পায় মেসার্স দোয়েল হেলথ অ্যান্ড সেনিটেশনের মালিক এবিএম শামছুন্নবী তুলিপ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় তিনটির টপ ওয়াশ ব্লক তৈরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী। টপ ওয়াশ ব্লক তৈরির কাজে যে আস্তর-সিলেকশন বালু ও ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে তা একেবারেই নিম্নমানের। ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী এ সমস্ত উপাদানের সঙ্গে যে পরিমাণ ইট, বালু, খোয়া ও সিমেন্ট দেওয়ার কথা ছিল তা না দিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করে ঠিকাদারের পকেট ভারি করছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় এক থেকে দুই বছরের মধ্যে ওয়াশ ব্লকের আস্তর খুলে পড়বে বলে ধারনা করছেন এলাকাবাসী।
দক্ষিণ শাকরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কাজের শুরুতে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঠিকাদার কাজ করতে শুরু করে ছিল। আমি মৌখিকভাবে অভিযোগ জানালে তারা নিম্নমানের সামগ্রী ফেরত পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে কাজের সাইটে সময় না দিতে পারায় আবার তারা নিম্ন সামগ্রী দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
দক্ষিণ শাকরাইল সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আনোয়ারা সুলতানা বলেন, বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আমাকে অবগত করেন, আমার ইট, বালু, খোয়া সম্পর্কে কোন ধারনা নাই, বিষয়টি আমি ভালো বুঝিনা। সে জন্য আমি তাদের কিছুই বলতে পারি নাই।
কয়েড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার মেটারিয়ালস সম্পর্কে কোন অভিজ্ঞতা নেই ঠিকাদারের লোকজন খেয়াল খুশি মতো কাজ করে যাচ্ছেন, আমার সাথে তাদের কোন যোগাযোগ নেই। ঠিকাদার ও ঠিকাদারের কোন লোকজন আমাকে কোন ওয়ার্ক অর্ডার দেয় নাই।
ঠিকাদারের নির্ধারিত হেড রাজমিস্ত্রী বলেন, আমরা রাজমিস্ত্রী, ঠিকাদার যে সকল মালামাল পাঠান সেগুলো দিয়েই কাজ করতে হয়, এ সমস্ত মাল ভালো কিনা মন্দ তা আমরা কোন কিছু বলবো না। এর বেশি কিছু বললে আমার সমস্যা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার এবিএম সামছুন্নবী তুলিপ বলেন, জিনিসপত্রের যে দাম একটু এদিক সেদিক না করলে ঠিকাদাররা বাঁচবে না। আবার আমাদের কাজের টাকা উঠাতে হলে উপরের অফিসার থেকে শুরু করে নিচ পর্যন্ত ম্যানেজ করতে হয়। আপনারা যদি লেখালেখি করেন তাহলে আমি কাজ বাদ দিয়ে বসে থাকবো।
শিবালয় উপজেলার জনস্বাস্থ্য সহকারি প্রকৌশলী মো. দবিরুল ইসলাম বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়ার কোন সুযোগ নেই, প্রতিটি মালামাল দেখেই আমরা কাজ করাচ্ছি।
এ বিষয়ে জেলা জনস্বাস্থ্য নিবার্হী প্রকৌশলী গাজী ফাতিমা ফেরদৌস বলেন, স্কুলের টপ ওয়াশ ব্লক তৈরির কাজ পরিদর্শন করে দেখব, যদি সেখানে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এআরএস