জমজমাট কুলের বাজার

নুর মোহাম্মদ ওয়ালি উর রহমান রতন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪, ১১:২৯ এএম
জমজমাট কুলের বাজার
ছবি: আমার সংবাদ

উত্তরের জনপদ নীলফামারীর সৈয়দপুরে কুল বরইয়ের বিশাল বাজার গড়ে উঠেছে। ডালি, কার্টন আর টুকরিতে থরে থরে সাজানো বিভিন্ন জাতে কুল। দূর দূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে নিয়ে যাচ্ছেন কুলগুলো। বেশ জমজমাট বাজারটিতে প্রায় প্রতিদিনই সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা।

শহরের আড়তগুলোতেও আসছে বিভিন্ন জাতের কুল। বিশেষ করে বল সুন্দরী, সূর্যমুখী, বাউকুল, আপেলকুল, নারিকেল, কাশ্মীরি কুলে ভরা চারদিক। পার্শ্ববর্তী দিনাজপুরের পার্বতীপুর, খানসামা, চিরিরবন্দর, রংপুরের তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি, বগুড়ার সান্তাহার, পাবনার ঈশ্বরদী, নাটোরসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে এসব।

নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও পার্বতীপুরসহ রংপুর বিভাগের অন্যতম ব্যবসার কেন্দ্রস্থল হচ্ছে সৈয়দপুর। আর এ কারণেই ওইসব এলাকার কুল চাষি ও ব্যবসায়ীরা ন্যায্য মূল্য পেতে এবং অল্প সময়ে বিক্রির জন্য ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, নছিমন, রিকশা-ভ্যান ও ট্রেনে কুল নিয়ে আসছেন সৈয়দপুরে।

সরেজমিনে বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত চলছে কুলবরই কেনা-বেচা। আশপাশের চাষিরা কুল আনছেন ভ্যান, পিকআপ ভ্যানে করে। প্রতিদিন প্রচুর কেনা-বেচা হয় সৈয়দপুরের এই ফল আড়তে। শহরের ১ নম্বর রেলঘুমটি এলাকার পাশেই গড়ে ওঠা এ বাজারে গত বছরের তুলনায় এ বছর ক্রেতা-বিক্রেতাদের বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কুলের প্রকার ভেদে নির্ধারণ করা হচ্ছে দাম।

ভালো জাতের প্রতিমণ কুল বিক্রেতারা বিক্রি করছেন দুই হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকা পাইকারি দরে। এখানে পাইকারি সর্বনিম্ন এক হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকা মণের কুল পাওয়া যাচ্ছে। আর খুচরা বিক্রেতারা কুল বিক্রি করছেন গড়ে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১৫০ টাকায়।

আড়তে আসা রংপুরের আল মামুন জানান, সৈয়দপুরের বাজার ভালো, তাই প্রতিদিনই এখানে নিজের বাগানের কুল নিয়ে আসি। কুলের আকার হিসেবে প্রতিমণ এক হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করি। তবে এখানে যার দোকানের সামনে অস্থায়ী বাজার, তারা শতকরা ১০ টাকা করে নিয়ে নেন। ১৪ হাজার টাকার কুল বিক্রি করেছি, যার মধ্যে ১৪০০ টাকা দিতে হয়েছে। তাছাড়া আসা যাওয়ায় পৌরসভার টোল তো আছেই।

এ বিষয়ে হাজি গরিবুল্লাহ ফল ভান্ডারের মালিক জনি বলেন, আমরা এখানে সার্বিক নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার জন্য কয়েকজন লোক রেখেছি। সার্বিক নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখেই শতকরা ১০ টাকা করে নেওয়া হয়।

নাদিম ও হাসান নামের দুই আড়তদার জানান, গতবারের তুলনায় চলতি মৌসুমে তিনগুণ বেশি কুল তাদের আড়তে এসেছে। কুলের আমদানি যেমন বেড়েছে, তেমনি ক্রেতারও কমতি নেই। তবে এবার সিজনের সময় অনেক কম পেয়েছি আমরা।

এদিকে সৈয়দপুর শহরের খুচরা বাজারগুলোও অন্যান্য নিয়মিত ফলের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের কুল বড়ই দিয়ে ভরে গেছে। সব দোকানেই নানা জাতের কুলের ব্যাপক সমারোহ। সেই সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা পাড়া-মহল্লাসহ রাস্তায় ফেরি করে বাউ ও আপেল কুল বিক্রি করছেন। এতে ক্রেতারা হাতের নাগালেই মৌসুমি এ ফল পাচ্ছেন।

ইএইচ