মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া গ্রামে সন্তানের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মহিন (৪০) নামে এক পিতার বিরুদ্ধে।
আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টার সময় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত মহিনের স্ত্রী সংসারে অভাব অনটনের কারণে গত ১ বছর পূর্বে কাজের সন্ধানে সৌদি আরবে যায়। মহিন তার একমাত্র পুত্রকে নিয়ে ভাড়ারিয়া গ্রামে বসবাস করতেন। তার পুত্র তুহিন (৯) ভাড়ারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতেন।
মহিনের স্ত্রী সৌদি গিয়ে অন্য এক প্রবাসীর সাথে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। তারপর থেকেই শুরু হয় তাদের সংসার জীবনের কোলাহল। এরপর থেকেই তার স্ত্রী সংসারে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। আস্তে আস্তে স্বামী ও স্ত্রীর দণ্ডের বলি হতে থাকে পুত্র তুহিন।
স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া কারণে মাঝে মধ্যেই তুহিনকে বেধারক মারপিট করত। এরই জের ধরে আজ বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক ৯টায় স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে প্রস্তুতি নেয়ার সময় তুহিনের গায়ে পেট্রোল ঢেলে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয় মহিন। শিশু তুহিন দৌড়ে প্রতেবেশী লিপি আক্তারের বাড়ির উঠানে গেলে লিপি আক্তার নলকূপের পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পর আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও তুহিনের মুখমণ্ডলসহ শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়।
স্থানীয়রা মহিনকে আটক করে একটি চাপাতি উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর থানাকে বিষয়টি অবগত করেন। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় শিশু তুহিনকে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল রেফার করেন।
এ বিষয়ে লিপি আক্তার জানান, সারা শরীরে আগুন জ্বলতে থাকা অবস্থায় তুহিন আমার বাড়ীর উঠানে আসলে আমি তাকে পানি ঢেলে আগুন নেভাতে সহায়তা করলে মহিন আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং বিভিন্ন প্রকার গালিগালাজ ও আমার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মহিন মাঝে মধ্যেই তার সন্তানকে বেধড়ক মাধরক করতো। কেও এগিয়ে গেলে তাদের উপর চড়াও হতো। সে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন মাদক সেবন করতো বলে জানা যায়।
তার ভয়ে প্রতিবেশীসহ এলাকার কেও কথা বলার সাহস পর্যন্ত পেত না। আজ নিজ সন্তানের উপর পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। মহিনের উপযুক্ত শাস্তির দাবী জানান এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানা অফিসার ইনচার্জ মো. হাবিল হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি শুনেছি, তারা দুজনেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে এবং আমাদের আইনগত কাজ চলমান রয়েছে।
এইচআর