দিরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা, লড়াই হবে ত্রিমুখী

দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৪, ১২:০৯ পিএম
ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা, লড়াই হবে ত্রিমুখী

আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে দিরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার-প্রচারণা জমে উঠলেও ভোটারদের মধ্যে কোন উত্তেজনা কিংবা আগ্রহ তেমন দেখা যাচ্ছে না। নেই কোন সভা সমাবেশ, বৈশাখের এই সময়ে মাঠে ব্যস্ত কৃষক তাই প্রার্থীরা ছুটে চলছেন হাওরে, মাঠে ময়দানে।

একদিকে তীব্র তাপদাহ থাকায় তীব্র গরমকে উপেক্ষা করে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নগুলোতে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করে নিজেদের জন্য ভোট চাইছেন প্রার্থীরা।

প্রার্থীরা সব জায়গায় প্রচারণাও করার সময় পাচ্ছেন না এতে নির্বাচনি আমেজে ও ভাটা পড়েছে। সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও তেমন আগ্রহ নেই।

প্রার্থী ও সমর্থকরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচার প্রচারণা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ৬ষ্ট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ বছর দিরাইয়ে চেয়ারম্যান পদে পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছেন। এদের মধ্যে চারজন আওয়ামী লীগের।

তারা হলেন, দোয়াত কলম প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, ঘোড়া প্রতীকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন কুমার রায়, মোটরসাইকেল প্রতীকে জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজাদুল ইসলাম রতন, টেলিফোন প্রতীকে জেলা মহিলা আওয়ামী সহ-সভাপতি  মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রিপা সিনহা।

যেহেতু দল থেকে কাউকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি তাই সকলেই স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এছাড়াও সদ্য বহিষ্কৃত উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক দুইবারের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাপ মিয়া আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এবার প্রার্থিতা উন্মুক্ত করায় অর্থাৎ দলীয় প্রার্থী না থাকায় চেয়ারম্যান পদে ভোটের লড়াই হবে ত্রিমুখী। যদিও সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী তারপর ও দিরাই আওয়ামী লীগ দুইভাগে বিভক্ত। বিগত সংসদ নির্বাচনে ও দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগ দুভাগে বিভক্ত ছিল তাই উপজেলা নির্বাচনে ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ২ জন।

অপর দুজন ও জেলার আশীর্বাদ নিয়ে নাকি প্রার্থী হয়েছেন গুঞ্জন রয়েছে। বিভক্ত আওয়ামী লীগ প্রার্থী হওয়া কর্মী ও সমর্থকরা ও পড়েছেন বেকায়দায় এতে আওয়ামী লীগের ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ভোটের হিসাব করতে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এতে সুবিধাজনক অবস্থা আছেন সদ্য বহিষ্কৃত উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও দিরাই উপজেলা পরিষদের দুইবারের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি গোলাপ মিয়া। তার রয়েছে নিজস্ব ভোট ব্যাংক। যা ময়মনসিংহ সমাজ নামে পরিচিত। এই সমাজ সবসময়ই ঐক্যবদ্ধ থাকতে দেখা যায়। তেমনি এখানে রয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের ও নিজস্ব ভোট ব্যাংক। কিন্তু তারা পড়েছেন বেকায়দায় তাদের সম্প্রদায় থেকে প্রার্থী হয়েছেন তিন জন।

দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ও বর্তমান এমপি ড. জয়া সেন গুপ্তার কাছের মানুষ অপরজন উপজেলা যুবলীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি রঞ্জন কুমার রায়। দুজনই উপজেলার বেশ জনপ্রিয় ব্যক্তি। অপর দিকে উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রিপা সিনহা। এই সম্প্রদায়ের ভোট বিভক্তি রয়েছে। তাই তাদেরকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা গোলাপ মিয়া প্রার্থী হওয়ায় অনেক সুবিধাজনক অবস্থা রয়েছেন এবং গোপনে তৃণমূল বিএনপির ভোট ও তার পক্ষে রয়েছে। সব মিলিয়ে ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার লক্ষণই দেখছেন ভোটাররা।

এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন পাঁচ প্রার্থী আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন তিন প্রার্থী। তারা হলেন, টিউবেল প্রতীকে ফায়সাল আহমাদ, টিয়া পাখি প্রতীকে এবিএম মনসুর সুদীপ, চশমা প্রতীকে নাজমুল হাসান, তালা প্রতীকে এখলাছুর রহমান, উড়োজাহাজ প্রতীকে রুহুল আমিন।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন হাঁস প্রতীকে ছবি চৌধুরী, ফুটবল প্রতীকে রিনা বেগম, সেলাই মেশিন প্রতীকে হাফসা বেগম। ভাইস চেয়ারম্যান পদেও ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

ইএইচ