উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

ফুলগাজীতে নিয়ম রক্ষার ভোটে উপস্থিতি নেই ভোটারের

ফেনী জেলা প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৪, ০১:৩০ পিএম
ফুলগাজীতে নিয়ম রক্ষার ভোটে উপস্থিতি নেই ভোটারের

ফেনীর ফুলগাজীতে অনেকটা উচ্ছ্বাসহীন পরিবেশে বুধবার সকাল ৮টায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল থেকে যেন গুমোট মেঘলা আবহাওয়ার মতোই নির্বাচনের পরিবেশ ছিল থম ধরা। উপজেলার বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরেও নিয়ম রক্ষার এ নির্বাচনে ভোটারদের কোনো লাইন চোখে পড়েনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২জন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন একজন প্রার্থী।

তাছাড়া, এদের সবাই সরকারি দলীয় স্থানীয় সাংসদের পছন্দের প্রার্থী।একজনকে নির্বাচিত করতে অন্যদের ডামি হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন।এর সত্যতা পাওয়া যায়, সকাল সাড়ে আটটায় বন্ধুয়া দৌলতপুর স্কুল ভোটকেন্দ্রে গিয়ে এক ভোটারের কাছ থেকে। কেন্দ্রের বাইরে দাঁড়ানো আবুল কাসেম নামের ওই ভোটার বললেন, মূলত ভোটের ফলাফল তো আগেই ঠিক হয়ে আছে। তাই ভোটারদের মধ্যে কোনো উচ্ছ্বাস নেই।

আবুল কাসেম আরও বলেন, এখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আনন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার মূল প্রার্থী। অপর প্রার্থীর জাফর উল্যা ভূঞার কোনো প্রচার–প্রচারণা ছিল না। তাই নির্বাচনের ফলাফলও একরকম নির্ধারিত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বন্ধুয়া দৌলতপুর স্কুল ভোটকেন্দ্রের ১০টি বুথে ভোট দেবেন ৪ হাজার ২৭১ জন। অথচ ভোট শুরুর প্রথম আধা ঘণ্টায় ভোট দিয়েছেন ২৫ জনের মতো। এই কেন্দ্রে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুন মজুমদার ও জাফর উল্যাহ ভূঞাকে পাওয়া গেল। ভোটার উপস্থিতি কম কেন, প্রশ্নের উত্তরে দুজনই জানালেন বেলা বাড়লে ভোটার উপস্থিত হবেন। কেন্দ্রের বুথে সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তারা অনেকটাই অলসভাবে বসেছিলেন।

সকাল ৯টায় উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের আজমিরি বেগম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েও একই চিত্র দেখা যায়। এই কেন্দ্রের ১০টি বুথে ভোটার ৩ হাজার ৮৪৬ জন। অথচ সকাল নয়টা পর্যন্ত ভোট দিতে এসেছেন ৩০ জনের মতো।  

সকাল সাড়ে নয়টায় ফুলগাজী পাইলট উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের নয়টি বুথের তিনটি বুথে একটিও ভোট পড়েনি। এই কেন্দ্রে ৩ হাজার ৮৪৬ জন ভোটার রয়েছেন। তবে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ৫০ জনের মতো। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নয়ন দেবনাথ এ জন্য আবহাওয়াকে দায়ী করলেন। তিনি বলেন, সকালে ওই এলাকায় আবহাওয়া কিছুটা খারাপ ছিল। তাই ভোটার উপস্থিতি কম।

অন্যদিকে উপজেলার প্রায় সবকয়টি কেন্দ্রেই ভোটার উপস্থিত নেই বললেই চলে বলে জানা গেছে।এর মাঝেও উপজেলার আবদুল মজিদ স্কুল কেন্দ্রে ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রকে ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে।

প্রসঙ্গত,উপজেলায় ছয়টি ইউনিয়নে মোট কেন্দ্র ৩২টি। এর মধ্যে ২৮টি কেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ও ৪টি কেন্দ্র সাধারণ। প্রতিটি ভোটকেন্দ্র আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করার জন্য ১ জন ম্যাজিস্ট্রেট, ৪ জন পুলিশ ও আনসার মিলিয়ে ২০ জন রয়েছেন। সব মিলিয়ে কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের চেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিই বেশি ছিল।

বিআরইউ