বাঞ্ছারামপুরে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, আত্মহত্যার প্ররোচনায় স্বামী গ্রেপ্তার

বাঞ্ছারামপুর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২৪, ১২:০২ পিএম
বাঞ্ছারামপুরে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, আত্মহত্যার প্ররোচনায় স্বামী গ্রেপ্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সুমাইয়া আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূর আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১৫ মে) রাতে উপজেলার ছলিমাবাদ ইউনিয়নের ভুরভুরিয়া গ্রামে স্বামীর বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধারের পর বৃহস্পতিবার (১৬ মে) তার স্বামী মো. আব্দুল আজিজ রানাকে (৩২) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল আজিজ রানা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ভুরভুরিয়া গ্রামের মো. ছাত্তার মিয়ার ছেলে। ঘটনার ভিকটিম সুমাইয়া আক্তার পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের মেয়ে।

এ ঘটনায় গৃহবধূ সুমাইয়ার বাবা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। লিখিত অভিযোগে তিনি মেয়ের জামাতা আজিজ রানা, তার বড় ভাই মো. আল আমিন ও ছোট ভাই মো. মিস্টার মিয়াকে (২৮) আত্মহত্যায় প্ররোচনার জন্য দায়ী করেছেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, দুই বছর আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে রানার সঙ্গে সুমাইয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক কলহের জের ধরে অভিযুক্তরা সুমাইয়াকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। বিগত সময় বেশ কয়েকবার মারধর করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। অত্যাচার-নির্যাতন সইতে না পেরে সুমাইয়া প্রায়ই বাবার বাড়ি চলে আসতেন।

এই নিয়ে সুমাইয়ার বাবার বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে ভুরভুরিয়া গ্রামে একাধিকবার সালিশের মাধ্যমে বিচার করা হয়। এরপরেও সুমাইয়ার প্রতি অত্যাচার-নির্যাতন চালাতো তার স্বামী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। 

এসব সহ্য করতে না পেরে বুধবার (১৫ মে) রাত সোয়া ১১টার দিকে সুমাইয়া তার শ্বশুরের দোতলা বাড়ির বেডরুমের সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। এর কিছুসময় আগে সুমাইয়া তার ব্যবহৃত মুঠোফোন থেকে তার বাবাকে কল করে তাকে নির্যাতনের বিষয়টি অবহিত করে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

পরে খবর পেয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুন্নবী ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে।

মরদেহ উদ্ধারকারী এসআই নুরুন্নবী বলেন, গৃহবধূ সুমাইয়ার মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর তার স্বামীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর গৃহবধূর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে ৩০৬ ধারায় মামলা নেওয়া হয়েছে।  

বিআরইউ