গত ৫ বছরে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটনের সস্পদ বেড়েছে দ্বিগুণ। এবারের নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আ.লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
এর আগে ২০১৯ সালে প্রথমবার সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। এর মধ্যে তার আয় কমেছে প্রায় ৪ গুণ। তবুও সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় তিনি নিজেই এসব তথ্য দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার হলফনামায় উল্লিখিত তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৫৩ হাজার ৮৮৬ টাকা। ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৩৯ লাখ ২৪ হাজার ৬৯২ টাকায়। সে হিসেবে ৫ বছরের ব্যবধানে জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটনের মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি (২ দশমিক ১৯ গুণ)।
এদিকে ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ১ কোটি ৬৪ লাখ ৩৬ হাজার ১২১ টাকা। যা এবারের হলফনামায় দেখিয়েছেন বার্ষিক আয় ৪১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৩ টাকা। অর্থাৎ আগের আয়ের ৪ ভাগের ১ ভাগের মতো।
এছাড়া ২০১৯ সালের হলফনামায় শেয়ার-সঞ্চয়পত্র থেকে কোনো আয় ছিল না লিপটনের। ওইসময় নিজের একমাত্র আয়ের উৎস হিসেবে তিনি দেখিয়েছিলেন ব্যবসা।
এবার তিনি আয়ের খাত হিসেবে দেখিয়েছেন কৃষি খাত থেকে বার্ষিক ৩ লাখ টাকা, ব্যবসা থেকে ৩৩ লাখ ৮৭ হাজার ৯৭৩ টাকা ও অন্যান্য খাত থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
একই হলফনামায় তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ লাখ ৮৭ হাজার ৯৭০ টাকা ও চাকরি থেকে ১২ লাখ ২০ হাজার ৫৭২ টাকা।
এছাড়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে (অর্জনকালীন সময়ের আর্থিক মূল্য) কৃষি জমি ২ কোটি ৮৮ লাখ ৮৮ হাজার ৯০০ টাকার, অকৃষি জমির ১ কোটি ৬৯ লাখ ৭ হাজার ৫৪৯ টাকার, পৈত্রিক সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ৪৩ শতকের দালান ও দৃষ্টিপুল অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেডের ফ্যাক্টরির ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮ হাজার ৩৯৪ টাকার রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
যা গত ২০১৯ সালের হলফনামায় দেখিয়েছিলেন- স্থাবর সম্পদের মধ্যে কৃষি জমি (অর্জনকালীন মূল্য) ১ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৪০০ টাকার, অকৃষি জমি ৮ লাখ ২৪৯ টাকার ও যৌথ মালিকানাধীন ১ কোটি ৫০ টাকার দালান।
এবারের হলফনামা অনুযায়ী, লিপটনের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ রয়েছে ৩ লাখ টাকার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৪৩ লাখ ৩৪ হাজার ৮৪৯ টাকার, শেয়ার, বন্ড ও ঋণপত্রে ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান ধাতু ২১ লাখ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ও আসবাবপত্র ৮৫ হাজার টাকার।
একই হলফনামায় তার স্ত্রীর নামে নগদ, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, স্বর্ণালংকার, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র বাবদ ২৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩১৫ টাকার অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছে।
২০১৯ সালে লিপটন অস্থাবর সম্পদের মধ্যে হলফনামায় উল্লেখ করছেন নগদ ২ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৩৫ হাজার ২৩৭ টাকা, বন্ড, শেয়ার ও ঋণপত্র ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৮৫ হাজার টাকার, একটি করে পাজেরো ও কার ৪০ লাখ টাকার, আসবাবপত্র ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার।
এছাড়া ওইসময় ২১ লাখ টাকার ৪৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও স্ত্রীর নামে ৩ লাখ টাকার সাড়ে ৬ ভরি স্বর্ণালংকারের কথা উল্লেখ করেছিলেন তিনি। একই হলফনামায় স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পদ না দেখানো হলেও অস্থাবর সম্পদ দেখানো হয়েছিল ২৭ লাখ ৫৯ হাজার ৩১৫ টাকার।
প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতিতে প্রবেশ করেন জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন। পরবর্তী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পরিষদের সহ-সভাপতি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের এ সন্তান এখন পালন করছেন দলটির ফেনী জেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ।
ইএইচ