কিশোরগঞ্জে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ২ লাখ ১৩ হাজার গবাদিপশু

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৭, ২০২৫, ০৩:৩০ পিএম
কিশোরগঞ্জে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ২ লাখ ১৩ হাজার গবাদিপশু

আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কিশোরগঞ্জের খামারিরা গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভারতীয় গরু আমদানি না হলে এ বছর লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করছেন তারা।

জেলায় এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ২ লাখ ১৩ হাজার গবাদিপশু, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। তবে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশুর দামও কিছুটা বেশি হবে বলে জানিয়েছেন খামারিরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৬ হাজার। এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৯টি।

কিশোরগঞ্জ জেলার প্রায় ২৩ হাজার খামারে পশু মোটাতাজা করা হয়েছে।

এর মধ্যে ষাঁড় ৭০ হাজার ৭১টি, বলদ ৪ হাজার ৬টি, গাভি ১৮ হাজার ৫৫৯টি, মহিষ ১ হাজার ২৮৮টি, ছাগল ১ লাখ ১৩ হাজার ৮৯৬টি, ভেড়া ৫ হাজার ৫১৬টি, দুম্বা ৩৩টি প্রস্তুত রয়েছে। এবছর মোট চাহিদা ১ লাখ ৮০ হাজার ৯১১ টি পশুর। অবশিষ্ট থাকবে ৩২ হাজার ৪৫৮টি।

জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ১ লাখ ৮০ হাজার ৯১১টি, ফলে ৩২ হাজার ৪৫৮টি অতিরিক্ত পশু দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র পণ্ডিত বলেন, “প্রতি বছর কোরবানির চাহিদার চেয়েও বেশি পশু প্রস্তুত করা হয়। এ বছর যদি বাজার ভালো থাকে, তাহলে প্রায় হাজার কোটি টাকার পশু বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। এখানকার পশুগুলো প্রাকৃতিকভাবে মোটাতাজা হওয়ায় দেশজুড়ে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। খামারিদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।”

স্থানীয় কৃষক ও খামারিরা জানাচ্ছেন, দুধ উৎপাদনের পাশাপাশি উন্নত জাতের গবাদিপশু লালনপালনের মাধ্যমে আয় বাড়ছে। প্রান্তিক পর্যায়ে খামারিদের দেখাদেখি গড়ে উঠেছে বাণিজ্যিক খামারও।

করিমগঞ্জ উপজেলার সিদলার পাড় গ্রামের ইয়াসিন এগ্রো ফার্মের মালিক সুমন মিয়া জানান, “আমার খামারে দেশীয় পদ্ধতিতে অনেক গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। খরচ বাড়ায় এবার দামও বেশি চাওয়া হচ্ছে। খামারে ১ লাখ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা মূল্যের গরু রয়েছে।”

সদর উপজেলার খামারি খোকন মিয়া বলেন, “আমার খামারে ২২টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি এবার কোরবানির হাটে তুলব। গত বছর করোনার কারণে চাহিদা কম ছিল। এবার আশা করছি ভালো দাম পাবো।”

এদিকে অনেক ক্রেতা সরাসরি খামার থেকে গরু কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন। আবুল হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, “হাটে গরু কিনলে হাসিলসহ বাড়তি খরচ হয়। খামার থেকে কিনলে তা দিতে হয় না এবং পশু সুস্থ আছে কি না তাও নিশ্চিত হওয়া যায়।”

এ বছর স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে কিশোরগঞ্জের পশু দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হবে, যা জেলাটির গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

ইএইচ