নির্বাহী প্রকৌশলীর চূড়ান্ত নোটিশ

টাঙ্গাইলে এলজিইডির দুটি রাস্তার নির্মাণকাজ সম্পন্ন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৯, ২০২৫, ০৭:২৪ পিএম
টাঙ্গাইলে এলজিইডির দুটি রাস্তার নির্মাণকাজ সম্পন্ন

টাঙ্গাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দুটি রাস্তার নির্মাণকাজ সম্পন্ন না করেই ৫৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা দায়ের হওয়ার পর দ্রুত ওই দুই রাস্তার কাজ সম্পন্ন করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুদকের চাপ ও এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরের চূড়ান্ত নোটিশের মুখে পড়ে তারা এই কাজ শেষ করে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের আগস্টে নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তেবাড়িয়া রাস্তায় দপ্তিয়র বাজার থেকে কদিম কাকনা পর্যন্ত ১৬০০ মিটার পিচ ঢালাই এবং তিনটি বক্স কালভার্ট নির্মাণে ২ কোটি ২০ লাখ টাকায় মেসার্স ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশন কাজের চুক্তি করে। অপরদিকে, একই উপজেলার গয়হাটা থেকে ভাড়রা রাস্তায় সিংজোড়া থেকে নাটোরভাঙা পর্যন্ত পিচ ঢালাই কাজের জন্য ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকায় চুক্তি হয় মেসার্স সৈয়দ মজিবর রহমান অ্যান্ড অবনী এন্টারপ্রাইজ (জেভি) এর সঙ্গে।

তবে এলজিইডির একাধিকবার তাগাদা সত্ত্বেও কাজের কোনো অগ্রগতি হয়নি, ফলে স্থানীয় জনগণ চরম দুর্ভোগে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে এলজিইডির টাঙ্গাইল নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান চলতি বছরের ৬ মার্চ এবং ১২ মার্চ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটিকে চূড়ান্ত নোটিশ দেন।

পরবর্তীতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক বাসেদ আলী ২৭ এপ্রিল দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় এলজিইডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম ও মো. মাইনুল হক এবং দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের অভিযুক্ত করা হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কদিম কাকনা পর্যন্ত ১৬০০ মিটার রাস্তার পিচ ঢালাই এবং বক্স কালভার্টের কাজ শেষ হয়েছে। স্থানীয় শিক্ষার্থী, কৃষক, গৃহবধূ ও রিকশাচালকরা জানান, দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। তবে কাজ শেষ হওয়ায় এখন তারা স্বস্তিতে আছেন।

অন্যদিকে, সিংজোড়া থেকে নাটোরভাঙা পর্যন্ত রাস্তাটিও গত ৬ মে সমাপ্ত করা হয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, কাজ শুরু হলেও তা বারবার বন্ধ থাকায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। বর্তমানে কাজ সম্পন্ন হওয়ায় তারা যাতায়াতে স্বস্তি পাচ্ছেন। তবে ওই এলাকায় একটি ডোবায় কাঠের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। সেখানে একটি সেতু বা মাটি ফেলে রাস্তা নির্মাণের দাবি জানান তারা।

মেসার্স ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশনের মালিক শহীদুর রহমান খান জানান, তিনি দীর্ঘদিন হৃদরোগে ভুগছিলেন এবং চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। অসুস্থতার কারণে কাজ শেষ করতে পারেননি। মামলার পর দ্রুত কাজ শেষ করেছেন।

অন্যদিকে, মেসার্স সৈয়দ মজিবর রহমান অ্যান্ড অবনী এন্টারপ্রাইজের মালিক দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকায় তাঁর পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি কাজ সম্পন্ন করেছেন।

সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, কাজ দুটি নিয়ম মেনেই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ঠিকাদাররা অজ্ঞাত কারণে সময়ক্ষেপণ করে।

 এলজিইডির বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য চাপ দিয়ে আসছেন। চূড়ান্ত নোটিশ ও দুদকের মামলা দায়েরের পর অবশেষে কাজ দুটি সমাপ্ত হয়।

ইএইচ