বাগেরহাটে জোয়ারের পানিতে পৌর শহরসহ ২০ গ্রাম প্লাবিত

বাগেরহাট প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২৫, ০৭:০৬ পিএম
বাগেরহাটে জোয়ারের পানিতে পৌর শহরসহ ২০ গ্রাম প্লাবিত

ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র প্রভাবে সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মোরেলগঞ্জ পৌর শহরসহ অন্তত ২০টি গ্রাম, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুই দিন ধরে দিনে দু’বার করে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ায় জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

জোয়ারের পানিতে প্রায় ১১০ হেক্টর আউশ ধানের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। স্থানীয়দের দাবি, টেকসই ভেরিবাঁধ ও শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ না হলে ভবিষ্যতে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য ও মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী কাজী খায়রুজ্জামান শিপন। 

তিনি বলেন, “গত ১৭ বছরে ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়ে উন্নয়নের নামে মোরেলগঞ্জ পৌরসভায় লুটপাট হয়েছে। নাগরিকরা প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। শহর রক্ষায় কার্যকর বাঁধ নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টানা দুই দিনের বৃষ্টিপাত ও অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে পৌর শহরের গাবতলা, কাঠালতলা, খাউলিয়া, সন্ন্যাসী, মধ্য বরিশাল, ফাসিয়াতলা, বারইখালীসহ আশপাশের গ্রামগুলো পানিতে ডুবে গেছে। পানগুছি নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে শত শত পরিবারের রান্না-বান্না বন্ধ হয়ে গেছে।

শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা কার্যকর না থাকায় ড্রেন উপচে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বাজার, কাপুড়িয়া পট্টি সড়ক, কলেজ রোড, কেজি স্কুল সড়ক, কৃষি ব্যাংক সড়ক, নব্বইরশী বাসস্ট্যান্ড ও মেইন সড়কে ৫ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত পানি জমেছে। অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কেনাবেচা বন্ধ ছিল।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ক্লাসরুমে পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান ব্যাহত হয়েছে। পাশাপাশি দূরপাল্লার নৌযান ও যানবাহন চলাচলও বন্ধ রয়েছে।

পৌর এলাকার বাসিন্দা মশিউর রহমান মাসুম, আসাদুজ্জামান মিলন, নির্মল সাহা, হায়দার শেখ এবং ব্যবসায়ী পরিতোষ চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, “প্রতি পূর্ণিমায় এভাবে শহর তলিয়ে যায়। ১০-১৫ বছর ধরে দিনে দু’বার করে এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পৌরসভায় পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। যে ক’টি ড্রেন রয়েছে, সেগুলোরও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না।”

মোরেলগঞ্জ পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাবিবুল্লাহ জানান, “জোয়ারের পানিতে প্লাবিত এলাকাগুলোর পরিস্থিতি আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। কয়েকটি পয়েন্টে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ইএইচ