অভয়নগরে কমছে বাবুই পাখির বাসা

রাজয় রাব্বি, অভয়নগর (যশোর)  প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৫, ১২:৫৭ পিএম
অভয়নগরে কমছে বাবুই পাখির বাসা

কারুশিল্পের নিখুঁত নিদর্শন এবং পরিশ্রম ও একাগ্রতার প্রতীক বাবুই পাখির বাসা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। এক সময় তাল, খেজুর কিংবা উঁচু গাছে ঝুলতে দেখা যেত এসব বাসা, কিন্তু বর্তমানে যশোরের অভয়নগরে তা খুবই বিরল।

সম্প্রতি উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের এরশাদ এতিমখানা মাদ্রাসার সামনে কয়েকটি তালগাছে বাবুই পাখির বেশ কয়েকটি বাসা দেখা গেছে। 

বুধবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসার সামনের তালগাছগুলোর পাতায় ঝুলছে একাধিক বাসা। নওয়াপাড়া থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের এ দৃশ্য দেখতে অনেক কৌতূহলী মানুষ ভিড় করছেন।

জানা যায়, বাবুই পাখিকে অনেকে ‘তাঁতি পাখি’ নামেও ডাকেন। গ্রীষ্মকাল তাদের প্রজনন মৌসুম। এ সময় পুরুষ বাবুই ঠোঁট দিয়ে খড়কুটো সেলাইয়ের মতো করে নিপুণভাবে বাসা তৈরি করে। তবে এখন আর আগের মতো গ্রামের পথে পথে বাবুইয়ের বাসা তেমন দেখা যায় না। তাল ও খেজুরগাছ কমে যাওয়ায় তাদের বাসা বানানোর উপযুক্ত স্থানও সংকুচিত হয়ে পড়ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আজিজ মোড়ল বলেন, “২০ বছর ধরে আমাদের তালগাছে বাবুই পাখি বাসা বানায়। ছোটবেলায় এ দৃশ্য ছিল খুবই স্বাভাবিক। এখন গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে, ফলে বাবুই পাখির বাসাও হারিয়ে যাচ্ছে।”

প্রেমবাগ ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জসিমউদ্দীন খোকন বলেন, “বাবুই পাখির বাসা একসময় বাংলার গর্ব ছিল। আজ তা শুধুই স্মৃতির অংশ। তাদের রক্ষায় এখনই সচেতনতা ও কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন। না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শুধু বইয়ে এসব দেখবে।”

অভয়নগর পল্লী মঙ্গল আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ খায়রুল বাসার বলেন, “বাবুই পাখি শুধু আমাদের প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, শিক্ষার্থীদের শিক্ষারও অনুপ্রেরণা। এদের বাসা তৈরির দৃশ্য থেকেই আমরা ধৈর্য ও পরিশ্রমের শিক্ষা পেতাম। এখন আর সেসব দেখা যায় না।”

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, “বাবুই পাখিকে টিকিয়ে রাখতে হলে তাল-খেজুরসহ দেশীয় গাছ বেশি করে লাগাতে হবে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব কৃষি চর্চা ও কীটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণেও উদ্যোগ নিতে হবে।”

ইএইচ