ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর দুটি স্থানে বাঁধ ভেঙে অন্তত ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে এসব ভাঙনের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ বন্যার এক বছর পার না হতেই আবারও বাঁধ ভাঙায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়সারা কাজকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বণিকপাড়া এলাকায় সহদেব বৈদ্যের বাড়ি সংলগ্ন মুহুরী নদীর বাঁধ এবং গোসাইপুর এলাকায় সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একটি অংশ ভেঙে পড়ে।
এর ফলে উত্তর বরইয়া, দক্ষিণ বরইয়া, বণিকপাড়া, বসন্তপুর ও জগতপুরসহ অন্তত ছয়টি এলাকা পানির নিচে চলে যায়। একই দিন সন্ধ্যায় ফুলগাজী বাজার সংলগ্ন মুহুরী নদীর পানি প্রবেশ করে বাজারের একটি অংশ প্লাবিত হয়।
পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মনিপুর এলাকায় দুপুর থেকেই সিলোনিয়া নদীর পানি বেড়ে বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকাল থেকেই নদীর পানি বাড়তে থাকে। অনেক চেষ্টা করেও বাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তারা অভিযোগ করেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে দুর্বল বাঁধ মেরামতের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
ফুলগাজী বাজারের ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন মিন্টু বলেন, “প্রতিবছর জুন-আগস্ট মাসে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি বাজারে ঢুকে পড়ে। দোকানের মালামাল নষ্ট হয়ে যায়, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। কেউ কিছু করে না, তাই অভ্যস্ত হয়ে গেছি।”
মনিপুর এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম সুমন বলেন, “বন্যা এলে কর্মকর্তারা এসে জিও ব্যাগ ফেলে যাওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু পরে আর কোনো খোঁজ নেন না। এবারও ঠিক তাই হলো।”
ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ফেনীতে ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে শুক্রবার রাত থেকে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আকতার হোসেন বলেন, “উজানে ভারী বৃষ্টির কারণে নদীর পানি বাড়ছে। তবে মুহুরী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। পানি কমলে ভাঙনস্থলে জরুরি মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ইএইচ