সোনারগাঁয়ে নবজাতকের জন্ম: ইউএনওর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

পনির ভূইয়া, সোনারগাঁও প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
সোনারগাঁয়ে নবজাতকের জন্ম: ইউএনওর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

নবজাতকের জন্মকে কেন্দ্র করে যদি ভালোবাসা, সচেতনতা আর সবুজ পৃথিবীর স্বপ্ন জড়ানো যায়—তবে সেটিই হতে পারে একটি পরিবার ও সমাজের জন্য প্রেরণার গল্প। সোনারগাঁয়ে এমনই এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা রহমান। সদ্য জন্ম নেওয়া একটি শিশুর জন্য মিষ্টি, উপহার ও একটি চারাগাছ নিয়ে হাজির হলেন তিনি।

ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ভবনাথপুরে। সেখানকার এক পরিবারে নবজাতক জন্মের খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ওই বাড়িতে যান ইউএনও। শিশুটির নাম রাখা হয়েছে আরাফাত। তাকে ও তার মা মিতু আক্তারকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ইউএনও নিজ হাতে উপহার ও মিষ্টি দেন। সেই সঙ্গে বাড়ির আঙিনায় একটি ফলদ গাছের চারা রোপণ করেন।

চারা রোপণ শেষে ইউএনও ফারজানা রহমান বলেন, ‘আজকের শিশুর জন্ম যেন শুধু পরিবারের নয়, বরং সমাজের জন্যও আশার বার্তা হয়ে উঠুক। আমরা চাই, তার সঙ্গে সঙ্গে এই গাছটিও বেড়ে উঠুক—সবুজ এক ভবিষ্যতের প্রতীক হয়ে। এই গাছ ভবিষ্যতে তাদের সম্পদ হয়ে উঠবে।’

তিনি জানান, জেলা প্রশাসনের ‘গ্রীন অ্যান্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় জেলার বিভিন্ন স্থানে ইতিমধ্যে এক লাখ গাছ লাগানো হচ্ছে, যা শেষ হবে আগামী ১০ জুলাই।

‘আমাদের জেলা প্রশাসক স্যারের স্বপ্ন—নারায়ণগঞ্জে যেন সবুজ বিপ্লব ঘটে। যেহেতু এটি একটি শিল্পঘন জেলা, তাই এখানকার প্রকৃতিতে প্রাণ ফেরাতে আমাদের এ প্রচেষ্টা’—যোগ করেন ইউএনও।

ইউএনও জানান, কিছুদিন আগে এক দম্পতি তাঁদের সন্তানের জন্মদিনে কেক না কেটে একটি গাছ রোপণ করেছিলেন।

‘জেলা প্রশাসক স্যার ওই শিশুকে অফিসে ডেকে নিয়ে কেক কেটেছিলেন এবং উপহার হিসেবে একটি চারাগাছ দিয়েছিলেন। ঘটনাটি আমার মনে দাগ কেটেছিল। তখন থেকেই ভাবি—নবজাতকের জন্মদিনেও এমন কিছু করা যায় কি না। সেই ভাবনা থেকেই আজকের এই আয়োজন।’

এদিন ইউএনও ফারজানা রহমানের সঙ্গে এ সময় উপস্থিত ছিলেন— সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেগুফতা মেহেনাজ এবং পরিবেশ রক্ষা উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন। স্থানীয়রাও এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

‘একটি গাছ মানে একটি জীবন’—এ কথাকে হৃদয়ে ধারণ করেই ইউএনওর এ ব্যতিক্রমী উপহার ও শুভেচ্ছার আয়োজন। শুধু শিশুর জন্ম নয়, বরং তার সঙ্গে ভবিষ্যত পৃথিবীকে আরও বাসযোগ্য করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।

বিআরইউ