সোনারগাঁয়ে স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০৮:০৬ পিএম
সোনারগাঁয়ে স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের হাতুড়া পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত সোমবার ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

অভিযুক্তরা হলেন- জামপুর ইউনিয়নের হাতুরাপাড়া এলাকার আব্দুল্লাহ, লাল চান মিয়া এবং ফয়েজ ভুঁইয়া।

জানা যায়, সাদিপুর ইউনিয়নের একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফিরছিল। পথে অভিযুক্ত আব্দুলাহ  কথা আছে বলে তার বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আব্দুল্লাহ ওই শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক তার ঘরে নিয়ে আটকে ফেলে। এক পর্যায়ে অন্য আরও দুই সহযোগীকে ফোনে ডেকে নিয়ে তিনজন মিলে ভূক্তভোগীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ভুক্তভোগীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আইনের আশ্রয় নিলে তার পরিবারের সকল সদস্যকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। ভুক্তভোগীর মা স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় রান্নার কাজ করেন।

এলাকাবাসী জানায়, ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ভুক্তভোগীর মাকে (বাদী) ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের একটি দল। ভুক্তভোগী পরিবারকে দের লাখ টাকা দিয়ে আপোষনামায় স্বাক্ষর নিয়ে ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বোন জামাই মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, তার স্থির ছোট বোনকে তিনদিন আগে স্কুল থেকে ফেরার পথে অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ তার পথ আটকে নিজের বাসায় নিয়ে যায়। ওইসময় আব্দুল্লাহ বলেছিল যে আব্দুল্লাহর স্ত্রী তার জন্য কাঁঠাল রেখেছে। এ কথা মতো ওই ছাত্রী আব্দুল্লাহর সঙ্গে তার বাসায় যান। সেসময় তার স্ত্রী বাসায় ছিল না। আব্দুল্লাহর স্ত্রীর কথা জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ কোন উত্তর না দিয়ে মুখ ও হাত পা বেধে তার দুই সহযোগীকে ফোন দিয়ে বাসায় নিয়ে যায়। পরে তারা তিনজন মিলে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে তার শাশুড়ি এ ঘটনা শুনে তালতলা ফাঁড়িতে অভিযোগ করেন। অভিযোগের তিন দিন হলেও তারা কোনো সমাধান পাননি বলে অভিযোগ করেন। ঘটনাটিকে টাকার বিনিময়ে মীমাংসা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি শ্বশুরবাড়িতেই বসবাস করেন। এমন কিছু হলে অবশ্যই তিনি জানতেন। এটা অপ প্রচার।

তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এ ঘটনায় বাদী অভিযোগ করলেও মামলা দায়েরের বিষয়ে কিছু জানা নেই, এটা ওসি সাহেবের বিষয়। কারণ মামলা নেয়ার দায়িত্ব বা ক্ষমতা একমাত্র তারই। তবে তিনি সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বাদি ও তার পরিবারের কাউকে তিনি পাননি। টাকার বিনিময়ে মীমাংসা বিষয়ে তিনি বলেন, তার এ সম্পর্কে জানা নেই। তবে পরিদর্শন করেছেন।

ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার বিষয়ে অভিযুক্ত আ. সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অস্বীকার করেন। তিনি এ ঘটনা বিষয়ে কিছু জানেন না তবে কথা-কাটাকাটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (ইনচার্জ) আব্দুল হক বলেন, ঘটনার বিষয়ে তিনি অবগত নন।তদন্তকারী অফিসার বলতে পারবেন।

সোনারগাঁ থানার ওসি মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে তিনি জেনেছেন। তিনি নতুন যোগদান করেছেন। এ ঘটনায় একটি অভিযোগ হয়েছে। তদন্তের দায়িত্বে থাকা এসআইকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং তিনি ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন।

ইএইচ