‘এক শহীদ, এক বৃক্ষ’ কর্মসূচিতে রাজবাড়ীতে বৃক্ষরোপণ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০২৫, ০৬:১৪ পিএম
‘এক শহীদ, এক বৃক্ষ’ কর্মসূচিতে রাজবাড়ীতে বৃক্ষরোপণ

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মৃতিকে অম্লান রাখতে সারাদেশের মতো রাজবাড়ীতেও পালিত হয়েছে ‘এক শহীদ, এক বৃক্ষ’ কর্মসূচি।

শনিবার দুপুরে রাজবাড়ী শহরের নির্মাণাধীন ‘জুলাই স্মৃতি স্তম্ভ’ প্রাঙ্গণে জেলা প্রশাসন, বন অধিদপ্তর ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শহীদ মো. আব্দুল গণি শেখ, শহীদ মো. কুরমান এবং শহীদ মো. সাগর আহম্মেদের নামে তিনটি বৃক্ষ রোপণ করা হয়।

জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তারের নেতৃত্বে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শংকর চন্দ্র বৈদ্য, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. তারিফ-উল-হাসান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারিয়া হক, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রুবাইয়াত মো. ফেরদৌস, ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন-অর-রশিদ, এনডিসি নাহিদ আহমেদ, বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ হুমায়ুন কবিরসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরা।

বৃক্ষরোপণ শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত পরিচালনা করেন মডেল মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. আব্দুল্লাহ। এ সময় শহীদ পরিবারের সদস্যরা আবেগঘন বক্তব্য রাখেন।

শহীদ কুরমানের মেয়ে মিতু আক্তার বলেন, “আমার আব্বুর মতো কেউ ভালোবাসতে পারে না। এখন আর কেউ আমাকে ‘আম্মু’ বলে ডাকে না। আজ আব্বুর নামে যে গাছটি রোপণ করা হলো, তা দেখে মনে হয় দেশ তাকে ভুলবে না। আমি আমার বাবার হত্যার বিচার চাই।”

শহীদ গণির স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, “গতকাল ছিল আমার স্বামীর মৃত্যুর এক বছর। আজ জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ আমাদের কৃতজ্ঞ করেছে। তবে এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো হত্যার বিচার হয়নি—এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

শহীদ সাগরের বাবা মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “আজকের এই স্মরণীয় দিনে আমার সন্তানের নামে বৃক্ষ রোপণ হয়েছে—এটি আমাদের জন্য অনেক সম্মানের। আশা করি, জাতি শহীদদের স্মরণে রাখবে।”

জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, “সরকারঘোষিত মাসব্যাপী ‘জুলাই পুনর্জাগরণ কর্মসূচি’র অংশ হিসেবে ‘এক শহীদ, এক বৃক্ষ’ কর্মসূচি রাজবাড়ীতেও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আজ তিন শহীদের নামে বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে এবং তাঁদের নামসংবলিত ফলকও স্থাপন করা হবে। এ কর্মসূচি চলবে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত।”

আয়োজকরা জানান, এ কর্মসূচির মাধ্যমে একদিকে যেমন শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষিত হবে, তেমনি পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়ে জনসচেতনতাও সৃষ্টি হবে।

ইএইচ