বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে মেঘনা ও আশপাশের নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্লাবিত হয়েছে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, পুকুর, মাছের ঘের, ফসলি জমি, পানের বরজ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙিনা।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার উত্তর উলানিয়া ইউনিয়নের মেঘনার তীর ঘেঁষা আলিগঞ্জ-উলানিয়া নির্মাণাধীন সড়ক। ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ৫.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১৮ ফুট প্রশস্ত এ সড়কটি এখন পুরোপুরি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটি এখন যেন মরণফাঁদ।
গত শুক্রবার মেঘনার জোয়ারের চাপে রাস্তার অন্তত ১০টি স্থানে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়। বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার ক্ষতিগ্রস্ত অংশে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় বিকল্প সাকো তৈরি করে চলাচলের চেষ্টা করছেন এলাকাবাসী। প্রতিদিন অন্তত ৩০ হাজার মানুষ এই রাস্তা ব্যবহার করে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, হাটবাজার এবং উলানিয়া লঞ্চঘাটে যাতায়াত করেন।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম রাকিব বলেন, গত ২৫ জুলাইয়ের জলোচ্ছ্বাস এবং টানা বৃষ্টিতে উপজেলার অধিকাংশ উন্নয়নকাজ স্থবির হয়ে গেছে। উলানিয়া জিসি টু আলিগঞ্জ জিসি সড়ক প্রকল্পের অন্তত ৮-১০টি জায়গায় সড়ক ধসে গেছে। বিষয়টি জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে, দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘আমির ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর প্রতিনিধি জানান, জলোচ্ছ্বাসে নির্মাণাধীন কাজের প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানটি বড় ধরনের আর্থিক সংকটে পড়েছে।
এ বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা প্রকৌশলীকে সড়কটি পরিদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে এবং দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সৈয়দ আকবর আলী এবং উলানিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আসাদুল হক মিল্টন চৌধুরী বলেন, ‘সড়ক রক্ষায় দ্রুত উচ্চ গাইডওয়াল নির্মাণ ও টেকসই অবকাঠামোর দাবি জানাই।’
বিআরইউ