বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দুই-তিন মাস নয়, আগামী ২০২৩ কিংবা ২০২৪ সালের আগে ঠিক হবে না।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে ইআরএফ অডিটোরিয়ামে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ইআরএফ ডায়লগে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সহসা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উত্তরণ করতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে দেবপ্রিয় বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম বড় সমস্যা হলো সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনীতির প্রবণতার কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই। ২০১৫-১৬ সালের কোনো তথ্য নেই। তারপরও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে আমরা জানতে পারি। বাংলাদেশের আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৈষম্যও বেড়েছে। এ বৈষম্য শুধু আয় বৈষম্য নয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বৈষম্য খুবই প্রকট।
এ বৈষম্য ভোগ পর্যন্ত গেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান মূল্যস্ফীতিতে সীমিত আয়ের মানুষের জন্য ভোগ বৈষম্য আরও ব্যাপকভাবে আসবে৷ যা আগামী প্রজন্মের পুষ্টিহীনতায় আঘাত করতে পারে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমি আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে অর্থনীতির কোনো সুরাহা দেখছি না। আমি মনে করি যারা এখনও বলছেন আগামী ২ মাসের মধ্যে অর্থনীতি ঠিক হবে, চালের দাম ঠিক হবে। তারা কোনো উপকারী মন্তব্য করছেন না। তারা চট জলদি রাজনৈতিক চিন্তা থেকে মানুষকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন। এটার ফলে বাজারে আরও বেশি নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করবে। এক্ষেত্রে সরকারি স্বচ্ছ পদক্ষেপই একমাত্র বাজারকে স্থিতিশীল করতে পারে।
বিশিষ্ট এ অর্থনীতিবিদ বলেন, বর্তমানে তেলের দাম কিছুটা পতন হয়েছে তার কারণ হলো বাজার মন্দা। মন্দার কারণে কিছু কিছু জায়গায় পতন। সরবরাহের ক্ষেত্রে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধসহ অনেক ধরনের সমস্যা এটার ভেতরে আছে। আমাদের যোগাযোগ ও সরবরাহ ব্যবস্থায় কোনো অবস্থা ফিরে আসেনি। আর্থিক সঞ্চালনের ক্ষেত্রেও সে ধরনের সুরাহা ফিরে আসেনি এবং নিত্যপণ্যের মূল্যের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের পতন আমরা দেখছি না। গত দুই সপ্তাহে খাদ্য পণ্যের মূল্য উল্টো বেড়েছে। এটা হয়েছে টাকার মান কমার ফলে।
দেবপ্রিয় বলেন, শুল্ক হার শতকরা হিসেবে কমালেও টাকার হিসাবে কমবে না। আমি মনে করি সরকারকে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। এখানে কোনো সমন্বিত পদক্ষেপ দেখছি না। সরকার যেটুকু পদক্ষেপ নিচ্ছে সাশ্রয়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমদানি দিক থেকে সেগুলো ঠিক নিচ্ছে। তবে এগুলো পর্যাপ্তভাবে ও পূর্ণাঙ্গভাবে মধ্যমেয়াদে একটা কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।
এবি