বাংলাদেশের সরকারি খাতের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদ ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থায়ন অনুমোদন করেছে।
শনিবার এ অর্থায়নের অনুমোদন দেওয়া হয়।
‘স্ট্রেংদেনিং ইনস্টিটিউশনস ফর ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি (এসআইটিএ)’ নামে এ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সরকারি খাত আধুনিকায়নের মাধ্যমে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, রাজস্ব আহরণ, সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা, ক্রয় প্রক্রিয়া এবং আর্থিক তদারকির সংস্কারে সহায়তা করা হবে।
প্রকল্পটি পাঁচটি মূল সরকারি প্রতিষ্ঠানের শাসন কাঠামো ও দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করবে। এই সংস্থাগুলো হলো—বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিকল্পনা বিভাগ, বাংলাদেশ সরকারি ক্রয় কর্তৃপক্ষ (সিপিপি) এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (সিএজি)।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, ‘ব্যবসায়িক প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার এই প্রকল্পের মূল শক্তি, যা স্বচ্ছতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দুর্নীতি হ্রাসেও সহায়ক হবে। এই উদ্যোগ বাংলাদেশকে একটি আধুনিক, দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক সরকারি ব্যবস্থা গঠনে সাহায্য করবে।’
তিনি আরও জানান, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি সেবার গুণগত মান ও জনগণের প্রবেশগম্যতা বাড়বে, ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আস্থা আরও দৃঢ় হবে।’
বিশ্বব্যাংক জানায়, এই প্রকল্পের পাশাপাশি আরও একটি উন্নয়ন নীতিগত ঋণ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে, যা জুন মাসের শেষদিকে পর্ষদের সামনে উপস্থাপন করা হবে। সেই ঋণ রাজস্ব আহরণ, ব্যাংক খাতের সংস্কার, তথ্য ব্যবস্থাপনা, সরকারি বিনিয়োগ, সামাজিক সেবা এবং নিরীক্ষা ও জবাবদিহিতা ব্যবস্থার উন্নয়নে সহায়ক হবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও প্রকল্পটির টিম লিডার সুলেমানে কুলিবালি বলেন, ‘পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার সমন্বিত অংশগ্রহণের ফলে সরকারের কার্যকারিতা বহুগুণে বাড়বে, যা একটি টেকসই অর্থনীতির জন্য অপরিহার্য।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এসআইটিএ প্রকল্প এবং প্রস্তাবিত উন্নয়ন ঋণ পরস্পরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে এবং বাংলাদেশ সরকারের আধুনিক আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও কার্যকর সেবাপ্রদান নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।’
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংক অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে। এখন পর্যন্ত সংস্থাটি বাংলাদেশকে ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অনুদান, সুদমুক্ত ও স্বল্পসুদে ঋণ প্রদান করেছে। সূত্র: বাসস
ইএইচ