মাঝরাতে সংঘর্ষে জড়াল চবি ছাত্রলীগ 

চবি প্রতিনিধি  প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩, ১২:৪৭ পিএম
মাঝরাতে সংঘর্ষে জড়াল চবি ছাত্রলীগ 

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডা ও একপর্যায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্রলীগের তিনটি গ্রুপ সংঘর্ষ জড়িয়েছে। সংঘর্ষে  লিপ্ত গ্রুপ তিনটি হল সিএফসি, সিক্সটি নাইন ও বিজয়। 

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টায় মূল ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে রাত এগারোটায় সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের তিন পক্ষের নেতাকর্মী। পরে, ভোর চারটায় পুনরায় সংঘর্ষে জড়ায় তারা। ঘন্টাব্যাপী চলে সংঘর্ষ। 

জানা যায়, রাত সাড়ে ১০টায় ক্যাম্পাসের স্টেশনতলায় ঠুনকো বিষয়ে সিএফসির সদস্যের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয় সিক্সটি নাইনের আরেক সদস্য। যা এক পর্যায়ে হাতাহাতিে রূপ নেয়। এসময় সিএফসির অনুসারী ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মো. শাকিলকে মারধর করে সিক্সটি নাইনের অনুসারীরা। মারধরের খবর পেয়ে তার বন্ধু বিজয় গ্রুপের কর্মী ও আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মমিনুর রহমান আসিফ ঘটনাস্থলে যায়। পরে সিক্সটি নাইনের অনুসারীরা আসিফকেও মারধর করেন।

এই ঘটনার সূত্র ধরে ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় সিক্সটি নাইনের কর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে, সিএফসির কর্মীরা আমানত হলের সামনে এবং বিজয়ের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে অবস্থান নেয়। সংঘর্ষে সিএফসি ও বিজয়ের কর্মীরা সিক্সটি নাইনের কর্মীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। সংঘর্ষ চলাকালীন বন্ধ করে দেওয়া হয় বৈদ্যুতিক সংযোগ। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মাঝে ঢিল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায় তারা। এসময় ছাত্রলীগ কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া চালায়। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

পরে চবি প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ পরিস্থিতি স্থিতিশীল করে। কিন্তু, ভোর ৪টায় পুনরায় সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের তিন পক্ষের কর্মীরা। কয়েক ঘন্টা চলে সংঘর্ষ। 

সংঘর্ষের ঘটনায় সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, প্রথম বর্ষের ছাত্ররা সংঘর্ষ বাঁধিয়েছে। তবে, আমরা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করেছি। আমাদের ছেলেদের হলে নিয়ে গেছি। সভাপতির সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানা যাবে।

বিজয় গ্রুপের নেতা ও ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম সবুজ বলেন, সিক্সটি নাইন এ ঘটনার মূল হোতা। তারা সিএফসি গ্রুপের ঝামেলা করেছে। কিন্তু, অসৎ উদ্দেশ্য আমাদের বিজয়ের কর্মীদের মারধর করেছে। তাদের কারণেই ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। 

সিএফসি গ্রুপের নেতা ও  ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদাফ খান বলেন, কথা কাটাকাটি থেকে শুরু হয় হাতাহাতি। এক পর্যায়ে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা আমাদের কর্মী শাকিলকে মারধর করে। এসময় তাকে মারধরের হাত থেকে বাঁচাতে গেলে বিজয় গ্রুপের আসিফকেও মারধর করে তারা।

সংঘর্ষের বিষয়ে চবি প্রক্টরড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে এই ত্রিমুখী সংঘর্ষ ঘটেছে। আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। পুলিশের সহায়তায় পরিবেশ স্থিতিশীল করা হয়েছে। আমরা সবাইকে নিজেদের হলে প্রবেশ করতে বলছি। সবাই হলে চলে গিয়েছে। 

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে সিএফসি ও বিজয় উপগ্রুপ দুটি শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেলের অনুসারী এবং সিক্সটি নাইন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাসিরউদ্দিনের অনুসারী। 

আরএস