পাকিস্তানে আবারও হামলার আশঙ্কা, মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক    প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৫, ০৬:২৭ পিএম
পাকিস্তানে আবারও হামলার আশঙ্কা, মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ
ফাইল ছবি।

পেহেলগামে সাম্প্রতিক হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা যুদ্ধের রূপ ধারণ করতে চলেছে। দুই সপ্তাহ ধরে চলা শঙ্কার মধ্যেই পাকিস্তানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। এ হামলার কঠিন জবাব দিতে উঠেপড়ে লেগেছে পাকিস্তানও। এমন অবস্থায় লাহোরের মার্কিন কনস্যুলেট কর্মীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিবিসি জানায়, পাকিস্তানের লাহোর এবং তার কাছাকাছি ‘ড্রোন বিস্ফোরণ’ এবং ‘আকাশসীমায় সম্ভাব্য অনুপ্রবেশের’ খবর রয়েছে। এ অবস্থায় লাহোরে অবস্থিত মার্কিন কনস্যুলেট জেনারেল সব কর্মীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কনস্যুলেটের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে বলা হয়, লাহোরের প্রধান বিমান বন্দরের নিকটস্থ কিছু এলাকা কর্তৃপক্ষ খালি করছে বলেও প্রাথমিকভাবে কনস্যুলেট প্রতিবেদন পেয়েছে। সরাসরি সংঘাত হচ্ছে এমন এলাকায় থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সম্ভব হলে নিরাপদে ওই স্থান ত্যাগ করা এবং সম্ভব না হলে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে হামলায় পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে ভারত। তবে হামলায় জড়িত থাকার কথা শুরু থেকেই অস্বীকার এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ তদন্তে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে আসছে ইসলামাবাদ। তারপরেও পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তানিদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে। সব ধরনের বাতিল হয়েছে ভিসা। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতও করেছে ভারত।

পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে একই ধরনের পদক্ষেপ দিয়েছে পাকিস্তানও। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতে ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ, সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ।

এরপর দুদেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকির মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ক্রমেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে। যা রীতিমতো যুদ্ধের রূপ ধারণ করেছে। গত ৬ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে অন্তত ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে দাবি করছে পাকিস্তান।

ভারতের এ হামলার পর বুধবার (৭ মে) সারাদিন যুদ্ধের উত্তাপ লক্ষ্য করা গেছে দুদেশের মধ্যে। সকাল থেকে কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি হামলার পর নিজেদের সামরিক বাহিনীকে হামলা জোরদারের অনুমোদন দিয়েছে ইসলামাবাদ। ভারতের হামলায় ঝরা প্রতি ফোঁটা রক্তের চরম বদলা নেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।   

বিশ্লেষক এবং কূটনীতিকরা বলছেন, পাকিস্তান যে কাশ্মীরা হামলা চালিয়েছে, তার জোরালো প্রমাণ এখনও দেখাতে পারেনি ভারত। এ অবস্থার মধ্যেই হামলা চালানো ভারত। পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত এই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকলে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হতে পারে। 

আরএস