জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে টানা ১৯ দিন উত্তেজনার পর বর্তমানে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। উত্তেজনা অনেকটাই কমে এলেও দেশদুটির কূটনৈতিক ও সামরিক বিবৃতির পাল্টাপাল্টি যেন থামছে না। সর্বশেষ পাকিস্তানের পরিকল্পনা মন্ত্রী আহসান ইকবাল ভারতকে উদ্দেশ করে দিয়েছেন কড়া মন্তব্য।
রোববার নারোওয়ালে এক উদ্ধারসেবা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আহসান ইকবাল বলেন, “পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে এমন শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে যে মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যেই তাদের কান্না গিয়ে পৌঁছায় ওয়াশিংটনে।”—খবর জিও নিউজের।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের নেতৃত্ব এখন আর ‘আঘাত করবো কি না’—সেই প্রশ্ন করে না। এখন আমাদের কাছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস ও সক্ষমতা রয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব এমন পর্যায়ের যে ভারতের মাল্টি-মিলিয়ন ডলারের যুদ্ধবিমানগুলো পরিণত হয়েছে জং ধরা ধাতব টুকরোয়।”
মন্ত্রী দাবি করেন, বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সেনাবাহিনী একত্রে প্রমাণ করেছে যে “যুদ্ধ জেতা যায় দক্ষতা দিয়ে, সংখ্যা দিয়ে নয়।”
এদিকে, পাকিস্তান সরকার সাম্প্রতিক সামরিক সাফল্য তুলে ধরে ‘অপারেশন বুনিয়ান-উম-মারসুস’-এর একটি বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে দাবি করা হয়, পেহেলগাম হামলা ছিল ভারতের একটি সাজানো ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’—যার মাধ্যমে পাকিস্তানকে দোষারোপ করার পরিকল্পনা ছিল। প্রতিবেদন অনুসারে, ঘটনার মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে, যদিও পাকিস্তান নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানায়, যা ভারত প্রত্যাখ্যান করে।
পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, ৭ মে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে। এর অংশ হিসেবে মুরিদকে, বাহাওয়ালপুর ও মুজাফ্ফরাবাদে ভারতীয় বিমান হামলায় বেসামরিক লোকজন ও ধর্মীয় স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জবাবে পাকিস্তানও সামরিক প্রতিক্রিয়া জানায় এবং দাবি করে, তারা ভারতীয় সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পাকিস্তান ভারতের যুদ্ধবিমান ধ্বংস, এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিষ্ক্রিয় এবং ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে হামলার দাবি করেছে। এছাড়া ভারত ড্রোনের মাধ্যমে সীমান্তে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
যদিও পেহেলগাম পাকিস্তান সীমান্ত থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে, তবুও ভারতীয় গণমাধ্যম তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে। কিন্তু একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ওই দাবির অসঙ্গতির দিকটি তুলে ধরেছে।
ইএইচ