ভালো স্বামী বানাতে ‘স্কুল ফর হাসবেন্ডস’

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম
ভালো স্বামী বানাতে ‘স্কুল ফর হাসবেন্ডস’

জাতিসংঘের উদ্যোগে আফ্রিকার দেশ সেনেগালে চালু হয়েছে এক অভিনব কর্মসূচি—‘স্কুল ফর হাজবেন্ডস’। এখানে পুরুষদের শেখানো হয় কীভাবে দায়িত্বশীল ও সহানুভূতিশীল স্বামী ও পিতা হওয়া যায়।

স্কুলের এক ক্লাসে ইমাম ইব্রাহীম ডায়ানে ১৪ জন পুরুষকে উদ্দেশ্য করে হাদিসের বাণী স্মরণ করিয়ে দেন—“যে পুরুষ স্ত্রী ও সন্তানদের সহায়তা করে না, সে ভালো মুসলিম নন।” তিনি নিজের সন্তানকে গোসল করানো ও স্ত্রীর গৃহকর্মে সহযোগিতা করার অভিজ্ঞতাও ভাগ করেন।

পশ্চিম আফ্রিকার অনেক সমাজে পরিবার পরিকল্পনা, গর্ভকালীন যত্ন কিংবা প্রসবকালীন চিকিৎসার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সিদ্ধান্তেও নারীদের একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ কম। স্বামীর অনুমতি ছাড়া এসব সম্ভব হয় না। তাই এই স্কুল পুরুষদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, এইচআইভি সংক্রান্ত কুসংস্কার ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে শিক্ষাদান করছে।

ইমাম ডায়ানে শুধু ক্লাসেই নয়, জুমার খুতবায়ও এসব বিষয় তুলে ধরেন। ফলে এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে আরও বড় পরিসরে।

নারীরা এই উদ্যোগে সন্তুষ্ট। অনেকেই জানান, স্বামীরা এখন আগের চেয়ে সহায়ক হয়েছেন।

৬০ বছর বয়সী হাবিব ডিয়ালো জানান, আগে তিনি সন্তান জন্মদানে হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা বুঝতেন না। কিন্তু প্রশিক্ষণের পর তিনি নিজের ছেলেকে পুত্রবধূকে হাসপাতালে নিতে রাজি করিয়েছেন।

৫২ বছর বয়সী খারি নডেই বলেন, “আগে আমার স্বামী শুধু আদেশ করত। এখন সে রান্না করে, ঘরের কাজে সাহায্য করে।”

২০১১ সালে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি এখন সেনেগালের নারী, পরিবার, লিঙ্গ ও শিশু সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজর কাড়ছে। তারা এটিকে মাতৃ ও নবজাতক মৃত্যুহার কমানোর কার্যকর কৌশল হিসেবে দেখছে।

ইতিমধ্যে ২০টিরও বেশি কেন্দ্রে ৩০০ জনের বেশি পুরুষ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা ‘পিয়ার এডুকেটর’ হয়ে গ্রামেগঞ্জে ঘরে ঘরে গিয়ে সচেতনতা ছড়াচ্ছেন।

জাতিসংঘের লক্ষ্য, ২০৩০ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি ১ লাখ জীবিত জন্মে ৭০-এ নামানো এবং নবজাতক মৃত্যুহার প্রতি ১ হাজারে ১২-র নিচে আনা। বর্তমানে সেনেগালে মাতৃমৃত্যুর হার ২৩৭ এবং নবজাতক মৃত্যুহার ২১।