কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলার বন্যাকবলিত ৩০টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের প্রায় ১৫০টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
কুড়িগ্রামের অন্যান্য নদনদীসহ ব্রহ্মপূত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি গত তিন দিন ধরে ক্রমশ বাড়ছে। রৌমারী, চর রাজিবপুর, উলিপুর, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই মারাত্মক অবনতির দিকে যাচ্ছে। যার ফলে বানভাসী মানুষের দুর্ভোগ এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
রবিবার (১৯ জুন) দুপুর ১২টায় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়,গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২৭ সে.মি. ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৩২ সে.মি. এবং দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ সে.মি ওপর দিয়ে বইছে। ফলে এ জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতিরি আরও অবনতি হয়েছে এবং প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সেই সাথে বানভাসী এলাকায় শুকনো খাবার,বিশুদ্ধ পানি,গো-খাদ্য ও জ্বালানীর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে ।
জেলার সকল উপজেলা প্রশাসন ও ইউপি চেয়ারম্যান সূত্রে জানা যায়, সকল নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার ৯ উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের প্রায় দেড় শতাধিক গ্রামের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সেই সাথে শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। ইতোমধ্যেই তীব্র নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে অর্ধশতাধিক ঘর-বাড়ি। এছাড়াও বন্যার পানির কারণে জেলায় প্রায় ৬৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ৯ উপজেলার ৫ হাজার হেক্টর জমির আউশ, আমন বীজতলাসহ নানা ফসল এখন পানির নিচে।
নদীভাঙন ও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় বানভাসী মানুষ রয়েছে চরম দুর্ভোগে। এদিকে, তীব্র পানির স্রোতে নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মুড়িয়ারহাট এলাকায় অস্থায়ী বেড়ি বাঁধের একুশ ফুট ভেঙ্গে মেইনল্যান্ডের ফসলসমূহ নিমজ্জিত হয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন জানান, পানির তোড়ে নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে গেছে। পানি সামান্য বৃদ্ধি পেলেও পরিস্থিতি অনেকটাই স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এখন পর্যন্ত যা পূর্বাভাস রয়েছে- তাতে আগামী দুই দিন পর্যন্ত পানি সামান্য কমতে বাঁ বাড়তে পারে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, জেলার ৯ উপজেলার বন্যার্তদের ২৯৫ মেট্রিকটন চাল, নগদ ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শুকনো খাবার ১ হাজার প্যাকেট, শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ১৭ লাখ ৭৫হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা উপজেলা পর্যায়ে নির্বাহী অফিসারগণ পর্যায়ক্রমে বিতরণ করছেন।
আমারসংবাদ/এবি