তুহিন হত্যা মামলায় প্রধান আসামির মৃত্যুদণ্ড

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২২, ০৭:১৯ পিএম
তুহিন হত্যা মামলায় প্রধান আসামির মৃত্যুদণ্ড

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে তাসনিম সুলতানা তুহিন নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যা এবং লাশ গুমের মামলায় প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্না (২৫) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে মামলার অপর দুই আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্নার বাবা শাহজাহান সিরাজ ও মা নিগার সুলতানার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক হালিমুল্লাহ চৌধুরী এই রায় ঘোষণা করেন। মামলার চার বছর এক মাসের মধ্যে, দুই শতাধিক কার্যদিবস শুনানির পর এই রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রিয়াদ উদ্দীন আদালতের রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, আইনি লড়াইয়ের পর প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্নাকে বিজ্ঞ বিচারক মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। তবে মামলার অপর দুই আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ ও নিগার সুলতানাকে খালাস দেওয়ায় আমরা ক্ষুব্ধ। এই দুই আসামির বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

জানা যায়, গত ২০১৮ সালের ১৪সেপ্টেম্বর মামলার প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্না হাটহাজারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তাসনিম সুলতানা তুহিনকে (১৩) পৌরসভার ফটিকা এলাকার শাহজালাল পাড়ার সালাম ম্যানশনের দ্বিতীয় তলা থেকে অপহরণ করে একই ভবনের চতুর্থ তলার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আসামি মুন্না স্কুলছাত্রী তুহিনকে ধর্ষণ করে। আত্মরক্ষার্থে তুহিন চিৎকার করলে মুন্না তার মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে মুন্না তার বাবা-মায়ের সহযোগিতায় তুহিনের লাশ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে ঘরের আসবাবপত্র সোফার নিচে রাখে। ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পালাতে গিয়ে মুন্না পুলিশের হাতে আটক হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে তুহিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে মুন্নার বাবা শাহজাহান সিরাজ ও মা নিগার সুলতানা ঘর থেকে পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পরে মুন্না ও তার মা-বাবার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে হাটহাজারীর সর্বস্তরের জনগণ বিক্ষোভ করে। ওই সময় সপ্তাহব্যাপী লাগাতার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে বিভিন্ন সংগঠন। লাশ উদ্ধারের পরের দিন তুহিনের ভাই আকিব জাবেদ মুন্না বাদী হয়ে শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্নাকে এই ঘটনায় প্রধান আসামি এবং তার বাবা শাহজাহান সিরাজ ও মা নিগার সুলতানাকে বিবাদী করে মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

গত ২০২০ সালের ১০জুলাই আলোচিত এই মামলার চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। চার্জশিটে প্রধান আসামি শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্না এবং অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করে পুলিশ। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতা পরিহার করতে বাদিপক্ষ মামলাটি দ্রুত বিচার আদালতে হস্তান্তরের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। পরে আইন মন্ত্রণালয় থেকে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তরের জন্য গেজেট করা হয়।

কেএস