প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা: দণ্ডপ্রাপ্ত ৬ আসামির হাইকোর্টে জামিন

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: মে ১১, ২০২৩, ১০:৩৫ এএম
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা: দণ্ডপ্রাপ্ত ৬ আসামির হাইকোর্টে জামিন

তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে ২০০২ সালে হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যাচেষ্টা মামলায় নিম্ন আদালতে চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত ছয় আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (১০ মে) বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাদের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আসামিরা হলেন- গোলাম রসূল, জহুরুল ইসলাম, তৌফিকুর রহমান সঞ্জু, সাহাবুদ্দিন, আব্দুল রাকিব মোল্লা ও মনিরুল ইসলাম।

আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট গাজী মো. মোহসীন ও অ্যাডভোকেট শাহানারা পারভীন বকুল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান মনির বলেন, এ জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।

এর আগে সাতক্ষীরায় দুই দশক আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় করা অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

এ মামলার আসামিদের মধ্যে বাকি ৪৪ জনকে দেওয়া হয়েছে সাত বছর করে কারাদণ্ড। সাতক্ষীরার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডল এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

আসামিদের মধ্যে কারাগারে থাকা ৩৭ জনকে রায়ের সময় আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা একজনও আদালতে হাজির ছিলেন। ১০ আসামিকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার চলে। আর মামলার বিচার চলাকালে মৃত্যু হয় দুইজনের।

২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। ওইদিনই কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

এ মামলায় তদন্ত শেষে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা হয়েছে। এরপর মামলার আসামি রাকিবের আবেদনে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। একই সঙ্গে রাকিবের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। পরে রাকিবকে জামিন দেওয়া হয়।

রাকিবের আবেদন ছিল, যখন ঘটনার কথা বলা হয় তখন অর্থাৎ ২০০২ সালে তার বয়স ছিল ১০ বছর। সুতরাং তার বিচার হতে হলে শিশু আইনে হবে। বড়দের সঙ্গে দায়রা জজ আদালতে করা যাবে না। গত বছরের ৮ অক্টোবর ওই রুল খারিজ করে রায় দেন আদালত। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রাকিব। এ আবেদনে আপিল বিভাগ তিনমাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে বিচার সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।

এরপর বিচার শেষে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সব আসামিকে সাজা দিয়ে রায় দেন। রায়ে হাবিবুল ইসলামকে কয়েকটি ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ অন্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।

এইচআর