বিএসএফ‍‍’র গুলিতে নিহতের ঘটনায় এইচআরএসএস’র নিন্দা

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৪, ০৫:১৪ পিএম
বিএসএফ‍‍’র গুলিতে নিহতের ঘটনায় এইচআরএসএস’র নিন্দা

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে তেঁতুলিয়া সীমান্তে দুই বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় ‘এইচআরএসএস’  তীব্র নিন্দা ও সুষ্ঠু বিচারের আহ্বান জানিয়েছেন। 

বুধবার (০৮ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানিয়েছেন বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)। সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার পর তেঁতুলিয়া উপজেলার খয়খাটপাড়া বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকার ৪৪৬ নম্বর মেইন পিলারের ১৪ (আর) এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক আবদুল জলিল ও ইয়াসীন আলীর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ভারতের ফকিরপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা নিহত দুজনের লাশ নিয়ে যায়। নিহত দুজন হলেন তেঁতুলিয়া উপজেলার মাগুড়া এলাকার জুনু মিয়ার ছেলে আবদুল জলিল (২৪) ও একই উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের রক্ষতল এলাকার কেতাব আলির ছেলে ইয়াসীন আলী (২৩)। হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ। ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছে।

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৮ই মে পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক ১৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ২০১৫ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক মোট ২৭৭ জন বাংলাদেশি নিহত এবং ২৬১ জন আহত হয়েছেন। ভারতের বারবার প্রতিশ্রুতি এবং চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, এই দুঃখজনক ঘটনাগুলি উদ্বেগজনক হারে বছরের পর বছর ধরে ঘটছে। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক শুধু ২০২৩ সালে ৩০ জন বাংলাদেশি নিহত এবং আরও ৩১ জন আহত হন, যা সীমান্তের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি নাজুক পরিস্থিতি নির্দেশ করে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান এবং উভয় সরকারই সীমান্তে বেসামরিক জীবন রক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে। বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হলেও এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। আমরা উভয় দেশের কর্তৃপক্ষকে এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে গঠনমূলক সংলাপ এবং সীমান্তের হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে শূন্যে নিয়ে আসার বিষয়ে আহ্বান জানাই।

হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি বাংলাদেশ ও ভারত সরকারকে দুই বাংলাদেশি যুবক আবদুল জলিল ও ইয়াসীন আলীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাসহ পূর্ববর্তী সকল সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদেরকে শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছে। সীমান্ত এলাকায়, সমস্ত সীমান্তব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের নীতিগুলিকে সমুন্নত রাখতে দুই দেশের সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। আমরা আশা করি যে দুই বাংলাদেশি যুবক আবদুল জলিল ও ইয়াসীন আলীর মর্মান্তিক মৃত্যু বাংলাদেশের সীমান্তে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জনের লক্ষ্যে অর্থবহ সংলাপ ও পদক্ষেপের অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।

বিআরইউ