বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বিবেচনার লক্ষ্যে গঠন করা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কারও প্রতিপক্ষ নয় বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ।
শনিবার (৩ মে) সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ১২ দলীয় ঐক্যজোটের সঙ্গে সংলাপে বসার আগে তিনি এসব কথা জানান।
গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠায় আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সুনির্দিষ্ট, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করার মাধ্যমে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা মন্তব্য করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন রকম আদর্শিক অবস্থান থেকে তাদের মতামত দিয়েছেন। আমরা আশা করি, জাতীয় স্বার্থে, রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রশ্নে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যেকটা দল ও জোট কিছুটা ছাড় দিতে প্রস্তুত থাকবেন। কারণ, আমরা সকলে মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পুনর্গঠন, বিনির্মাণের জন্য সকলেই সমবেত হয়েছি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সব বিষয়ে একমত হওয়া সম্ভব না হলেও, রাষ্ট্র গড়ার ক্ষেত্রে একমত হতে পারবেন দাবি করে আলী রীয়াজ বলেন, দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে। নেতাকর্মীরা জাতীয় স্বার্থে নিজ নিজ অবস্থান থেকে যেমন কথা বলবেন, আবার ছাড় দেয়ারও মানসিকতা থাকতে হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আরও বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সুনির্দিষ্ট ভূমিকা নেই। কমিশন কারও প্রতিপক্ষ নয়। সুনির্দিষ্ট জাতীয় সনদ তৈরি আমাদের মূল লক্ষ্য।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জাতি ও রাষ্ট্র হিসেবে অগ্রসর হওয়ার জন্য তা অত্যন্ত প্রয়োজন উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের এক জায়গায় আসতে হবে। এর অর্থ এ নয় যে, সব বিষয়ে আমরা একমত হতে পারব। কিন্তু যেগুলো রাষ্ট্র বিনির্মাণে, পুনর্গঠনের প্রয়োজন, গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহি ব্যবস্থা তৈরির জন্য প্রয়োজন সেখানে আশা করি একমত হতে পারব। সেটা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেষ্টা।
একটা অনির্বাচিত সরকার যদি দীর্ঘসময় থাকে এটা বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে জানিয়ে ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬ প্রস্তাবের মধ্যে এনপিপি ১১২টিতে একমত পোষণ করেছে। এ ছাড়া ২৬টিতে একমত নয় এবং ২৮ টায় আংশিক একমত হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, আমরা ওনার কাছে এটাই আশা করি যে, আপনি এমন একটা ভোটের ব্যবস্থা করে দেন যাতে মানুষ বলতে পারে দীর্ঘ ১৫ বছর পর আমরা এমন একটা ভোট দেখতে পেরেছি। আমার ভোটের প্রতি কেউ জোর করতে পারেনি, আমার ভোট কেউ টাকা দিয়ে কিনতে পারেনি, আমি আমার ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সরকার গঠন করতে পেরেছি।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় এই বৈঠক উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফররাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান। এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ছাড়াও ১২ দলীয় জোটের ১১ নেতা এই সংলাপে অংশ নিয়েছেন।
বিআরইউ