নৌকার মনোনয়নে বিদ্রোহীদের নাম পাঠাচ্ছে দায়িত্বশীলরা

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: মে ১২, ২০২২, ০১:৪০ এএম
নৌকার মনোনয়নে বিদ্রোহীদের নাম পাঠাচ্ছে দায়িত্বশীলরা

গত শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে কোনো বিদ্রোহীকে দলীয় পদ-পদবিতে রাখা হবে না। এমনকি বিদ্রোহী কোনো প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রে নাম পাঠানো যাবে না। 

শুধু বিদ্রোহীই নয়, এদের মদতদাতাদেরও শাস্তির আওতায় পড়তে হবে। তাদেরও পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে সম্মেলন করতে হবে। দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে নৌকা বিরোধীদের পুনর্বাসনের কাজ চলছেই।

 আর্থিক সুবিধা নিয়ে কিংবা স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে জেলা-উপজেলার শীর্ষ নেতারা এ কাজ করে চলেছেন। একইভাবে দলের সহযোগী সংগঠনের নেতারাও এ কাজে পিছিয়ে নেই। অতি সম্প্রতি কয়েকটি ইউনিয়ন, পৌরসভা ভোটের জন্য দলীয় প্রার্থীর নাম আহ্বান করা হলে জেলা নেতারা এমন কাজ করেছেন বলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ছে। 

পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার ৯নং কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়নের নাম পাঠানো হয়েছে দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর। ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে তারা দুইজনই নৌকার বিরোধিতা করেন। যার ফলে নৌকা হেরে যায় এবং এখানে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হয়। 

বিদ্রোহীদের নাম পাঠানো যাবে না— এমন নির্দেশনা থাকলেও তথ্য গোপন করে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা যোগসাজশ করে ওই দুই বিদ্রোহী প্রার্থী মো. কবির হোসেন বাহাদুর ও আলহাজ নান্না মিয়ার নাম পাঠিয়েছেন। কবির হোসেন বাহাদুরের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে পরিচিত। 

২০১৭ সালে ওই ইউনিয়নে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা আলহাজ নান্না মিয়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মিথ্যা কথা বলে রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর করিয়ে উপজেলা থেকে জেলায় প্রেরণ করেন। 

জেলা কমিটি বিদ্রোহী প্রার্থীর তথ্য গোপন করে তাদের নাম সুপারিশ করে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রে প্রেরণ করেন। এতে এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিগত ত্রিশাল পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার পরাজয়ের পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখেন তৎকালীন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইব্রাহিম খলিল নয়ন।

এমনটা দাবি করে নৌকার প্রার্থী নবী নেওয়াজ সরকার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। বছর না ঘুরতেই সেই নয়নকে পদোন্নতি দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি করা হয়েছে। গত ৭ মে ইব্রাহিম খলিল নয়নকে সভাপতি করে দুই সদস্যবিশিষ্ট ত্রিশাল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।