একাধিক দিনে সংসদ নির্বাচন চায় এনডিএম

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২২, ০৩:০৭ পিএম
একাধিক দিনে সংসদ নির্বাচন চায় এনডিএম

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একাধিক দিনে সম্পন্ন করাসহ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ১২টি সুনির্দিষ্ট দাবি জানিয়েছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)।

রোববার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক সংলাপের প্রথম দিন এই দাবি জানায় দলটি।

এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, সরকারি দলের প্রার্থীর এজেন্ট ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করতে পারে না উল্লেখ করে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট ব্যবস্থা বাতিল করারও দাবি জানন ।

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এই বিষয়ে প্রায় প্রতিটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হলেও কোন সুরাহা হয় নাই। স্থায়ী সমাধানের জন্য আমাদের প্রস্তাবনা হলো পোলিং এজেন্ট নিয়োগের ব্যবস্থাটি বাতিল করতে হবে। 

তিনি বলেন, বিকল্প হিসাবে প্রতিটি ভোটকেন্দ্র ভোটপ্রদানের গোপন কক্ষ ব্যতীত সিসিটিভির আওতায় আনতে হবে। এই সিসিটিভির লাইভ ফুটেজ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের দেখার ব্যবস্থা করতে হবে। এসময় দলটি নির্বাচনকালীন সময়ে জনপ্রশাসনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার দাবি জানায়। 

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক ময়দানে আমরা কাজ করি জনগণের কল্যাণের জন্য। এর আগে যখন রাজনীতি ছিল না, গণতন্ত্র ছিল না, তখন যুদ্ধ করে ক্ষমতা নিতো। 

আজকে যুদ্ধের দিন না, জনগণের ভোটের জন্য আমরা কথা বলি। এখানে তলোয়ার নিয়ে আমরা কথা বলতে চাই না। এবং তলোয়ার নিয়ে কেউ আসলে আমরা উল্টো তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াব।

এটা নিয়ে তো আমি আইন ভঙ্গ করছি। আইন তো আমাকে তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াতে বলে না। সেটা যদি করতে হয় তাহলে পার্লামেন্টে বসে আইন পরিবর্তন করতে হবে।
 
আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। একেকজন একেক ডায়ালগবাজি করে। খেলা হবে একজন বলে আর ভাইরাল হয়ে যায়। সবাই বলে হ্যাঁ এখন আমার খেলা হবে। এবং তার দলের যে পোলিং এজেন্ট বা গুণ্ডাবাহিনী প্রভাবিত হয়ে যায়। 

তারা বলে আমাদের নেতারা বলেছে খেলা হবে, নে এইবার ব্যাট বের কর, ছুরি বের কর, বন্দুক বের কর। এইবার আমরা খেলব। এটা আমরা দেখতে চাই না। 

দলটির যুগ্ম মহাসচিব মোমিনুল আমিন বলেন, জনগণ প্রত্যাশা করে, নির্বাচনকালীন সময়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুপার প্রাইম মিনিষ্টার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে জনপ্রশাসনকে নিরপেক্ষ এবং পেশাদারভাবে কাজ করতে প্রয়োজনীয় অনুশাসন প্রদান করবেন। 

তফশিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের গোপন তালিকা থেকে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, তথ্য এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব নতুনভাবে নিয়োগ করতে হবে। 

রাজনৈতিক দল এবং অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশন জনপ্রশাসনের এই গোপন তালিকা তৈরি করবে। 

এছাড়াও এই তালিকা থেকে প্রয়োজন অনুসারে বা রাজনৈতিক দলগুলোর দাবির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় কমিশনার পরিবর্তন করতে হবে। এসময় তিনি ইভিএম ব্যবহারে পেপার অডিট ট্রেইল সংযুক্ত করা ও একাধিক দিনে ভোট করার দাবি জানান।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের ৩০০ আসনে ইভিএম বহারের সক্ষমতা রয়েছে বলে আমরা মনে করি না। তথাপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি ইভিএম ব্যবহার করা হয় সেক্ষেত্রে আমরা ডিজিটাল পেপার অডিট ট্রেইল ব্যবহারের পাশাপাশি পেপার অডিট ট্রেইল সংযুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি। 

আমরা বিশ্বাস করি, একজন ভোটারের প্রদত্ত ভোটটি ইভিএম মেশিনের মেমোরিতে সঠিকভাবে সংরক্ষিত হয়েছে কিনা সেটা নিশ্চিত করতে ইসি সাংবিধানিকভাবে দায়বদ্ধ। 

এনডিএমের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- অবাধ রাজনৈতিক চর্চার সুযোগ সৃষ্টি করা, নির্বাহী বিভাগ থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ না দেয়া, নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যম বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন করা, ভোটের আগেই আসনভিত্তিক সীমানা পুনঃনির্ধারম করা, জেলাপর্যায়ে শক্তিশালী নির্বাচনী ট্রাইবুনাল গঠন করা, রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার বন্ধ করা, বিদেশী পর্যবেক্ষক সহ নির্বাচনী পর্যবেক্ষন টিমকে অনুমতি দেওয়া, নির্বাচনী ব্যয়সীমা কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা ও প্রচারকালীন সময়ে প্রতিটি বিভাগে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা।

 

আমারসংবাদ/টিএইচ