‘গুম ও খুনের’ নিরপেক্ষ তদন্তে জাতিসংঘের ভূমিকা চায় গণঅধিকার পরিষদ

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২২, ১০:৪১ পিএম
‘গুম ও খুনের’ নিরপেক্ষ তদন্তে জাতিসংঘের ভূমিকা চায় গণঅধিকার পরিষদ

বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিনিধি দলের সাথে ‍‍`গণঅধিকার পরিষদ‍‍`এর সাক্ষাৎ; বিচার বহির্ভূত হত্যা,গুম,খুনের নিরপেক্ষ তদন্তে জাতিসংঘের ভূমিকা চায় ‍‍`গণঅধিকার পরিষদ‍‍`।

বুধবার (১৭ আগস্ট) রাতে গণঅধিকার পরিষদের যুগ্মআহ্বায়ক ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ এক বার্তায় জানান,  আজ সকাল সাড়ে ১১ টায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দলের সাথে গনঅধিকার পরিষদ এর প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলকে উপরোল্লিখিত বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।গণঅধিকার পরিষদ এর প্রতিনিধি দলে ছিলেন সদস্য সচিব নুরুলহক নুর ,যুগ্মআহ্বায়ক মোঃ রাশেদ খান,ফারুক হাসান।

গণঅধিকার পরিষদরে প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমান সরকারের শাসনামলে গত ১৩ বছরে বাংলাদেশে ৬ শতাধিক মানুষ গুম ও তিন হাজারের অধিক মানুষ  বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। এসব গুম ও হত্যাকান্ড আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা সংঘটিত হলেও আজ অবধি কোন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি।বরং সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এসব মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সমর্থনে সুস্পষ্ট বক্তব্য এসেছে। যা তাদেরকে আরও বেপরোয়া করে তুলেছে।

২০২১ সালে কারাগারে লেখক ও উদ্যেক্তা মুশতাক আহমেদ, হেফাজত নেতা মাওলানা ইকবালকে নির্যাতন করে হত্যা, মোদি বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতারকৃতদের নির্যাতন, শাহবাগ থানায় ছাত্রনেতা রবিউল হাসান, আলামিন আটিয়া, সজল ও নাজমুল করিম সোহাগকে মুখে গামছা বেঁধে অমানবিকভাবে পেটানো, চোখে মরিচ দিয়ে নির্যাতন; এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে ভোলায় পুলিশ কর্তৃক গুলি করে দু‍‍`জনকে হত্যা, নাটোরে যুবনেতা নুরশাদকে হত্যায় কারো বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের সন্ত্রাসী হামলা,পুলিশি হামলা-মামলায় সভা-সমাবেশের মতো নাগরিকদের মৌলিক অধিকারও আজ এক চরম হুমকির সম্মুখীন।যা  মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

আদালতকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রতিষ্ঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তুলে দিয়ে ২০১৪ এবং ১৮ এর মতো বিনা ভোটের ও ভোট ডাকাতির নির্বাচন করে সরকার দেশের বর্তমান সংকট তৈরি করেছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ব্যতীত আগামী নির্বাচন হলে তা দেশে সংঘাত-সহিংসতা বাড়াবে,মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটাবে। এক্ষেত্রে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনে জাতিসংঘও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

সরকারের জবাবদিহিতা না থাকায় তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বেআইনি; এমনকি মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড করাচ্ছে। একটি স্বাধীন-সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক নাগরিকদের নির্যাতন, গুম, খুন, বিচারবর্হিভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ অশনি সংকেত। গত ১২ আগস্ট নেত্রনিউজ কর্তৃক প্রকাশিত অনুসন্ধানী রিপোর্ট ‍‍`আয়নাঘরের বন্দী‍‍`তে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক গুম করে আটকে রাখা এবং নির্যাতনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শুধু আয়নাঘরের বন্দী নয়, এ সরকারের শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গত ১৩ বছরে সংগঠিত সকল গুম ও বিচারবর্হিভূত হত্যাকন্ডের বিষয়ে জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ তদন্ত চায় গণঅধিকার পরিষদ।


ইএফ