মহানগর দক্ষিণ আ.লীগের ৬১ ও ৬৪ ওয়ার্ডের সম্মেলন নিয়ে ধুম্রজাল

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২২, ০৮:৫৪ পিএম
মহানগর দক্ষিণ আ.লীগের ৬১ ও ৬৪ ওয়ার্ডের সম্মেলন নিয়ে ধুম্রজাল

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অন্তরগত ৬১ ও ৬৪ ওয়ার্ডের সম্মেলন ঘিরে ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে। দুই ওয়ার্ডের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরও ফের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করায় ক্ষুব্ধ দলটির স্থানীয় নেতারা। তাদের দাবি-পুনরায় সম্মেলন করার উদ্যোগ নেয়ায়  হাস্যকর পরিস্থিতির তৈরি হচ্ছে। তবে এই দুই ওয়ার্ডে সম্মেলনের আর কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করছেন মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির। তিনি বলেন, একটি স্থানে কখনোই বার বার সম্মেলন হয়না। একবারই হয়। এমন সিদ্ধান্ত যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা।

জানাযায়, গত ৩ সেপ্টম্বর ডেমরা থানার আওতাধীন ৬৪ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। ওই সম্মেলনের পর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সহ পদপ্রত্যাশীদের বায়োডাটা জমা নেন মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।  আর গত ২৬ সেপ্টম্বর কদমতলী থানার সাথে ৬১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবে ৬১ ও ৬৪ এ ওয়ার্ডের সম্মেলন শেষ হলেও ফের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারন করা হয়েছে। আগামী ১৩ অক্টোবর রাজধানীর ওয়াপদা কলোনি খেলার মাঠে যাত্রাবাড়ীর আওতাধীন ৪৮, ৪৯, ৫০, ৬২, ৬৩ ও ৬৫ ওয়ার্ডের সাথে ৬১ ও ৬৪ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। একই ওয়ার্ডে দুই বার সম্মেলন হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ফুটে উঠেছে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমন্বয়হীনতা এবং সাংগঠনিক দুর্বলতা। বিষয়টি নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের ভুক্তভোগী নেতারা।

অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, গত বছরের নভেম্বর মাসে ৬৪ নং ওয়ার্ড ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। ঢাকা-৫ এর টীমের তত্ত্বাবধানে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের অধীনে ওই ওয়ার্ডের ইউনিট সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং কমিটি গঠিত হয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ৩ অক্টোবর ডেমরা থানার অধিনে ৬৪ নং ওয়ার্ডের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তবে ২৫ আগস্টে ৬৪ নং ওয়ার্ড পুনরায় যাত্রাবাড়ী থানার অন্তর্ভুক্তির আবেদন করে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে নতুন ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের সম্মেলনের অনুমতি দেয়া হয়। অথচ যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগেই ওই ওয়ার্ডের সম্মেলন সম্পূর্ণ হয়েছে। এমন অবস্থায় দ্বিতীয় বার সম্মেলনের পদক্ষেপ সাংগঠনিক শৃংখলা ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। পুনরায় সম্মেলন করার উদ্যোগ নেওয়ার মধ্যে দিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি ও হাস্যকর পরিস্থিতির অবতারনা হচ্ছে।

একই অবস্থা ৬১ ওয়ার্ডের। গত বছরের সেপ্টম্বর মাসে ওই ওয়ার্ডকে কদমতলী থানায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগ বরাবর আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগ ৬১ নং ওয়ার্ড কদমতলী থানায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং গত  চলতি বছরের ২৬ সেপ্টম্বরে কদমতলী থানার সাথে ৬১ নং ওয়ার্ড এর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ বাস্তবায় ৬১ নং ওয়ার্ডের পুনরায় সম্মেলন করার উদ্যোগ যাত্রাবাড়ী থানা থেকে নেয়ার মধ্য দিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি ও হাস্যকর পরিস্থিতির অবতারনা হচ্ছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ণ করিব আমার সংবাদকে বলেন, ৬১ ও ৬৪ ওয়ার্ডের সম্মেলন হবে না। এখানে সম্মেলন হয়েছে। একটি স্থানে কখনোই বার বার সম্মেলন হয়না। সম্মেলন হওয়ার পর ফের সম্মেলনের সিদ্ধান্ত আনকালচার। এটা যাত্রাবাড়ি থানা আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করার পায়তারা। তিনি বলেন, ৬১ ও ৬৪ ওয়ার্ড যাচাই-বাছাই করেই ডেমরা ও কদমতলী থানার অধিনে সম্মেলন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কোনো ভুল নেই।

ইএফ