গণতন্ত্র মঞ্চের দেশব্যাপী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩, ০৩:২৩ পিএম
গণতন্ত্র মঞ্চের দেশব্যাপী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন, বিদ্যুৎ গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোসহ ১৪ দফা দাবিতে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ সারাদেশে পদযাত্রা ও গণসংযোগের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। 

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র মঞ্চ বিএনপিসহ সকল বিরোধী দল আশা করি, স্ব স্ব জায়গা থেকে তারা একই কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। গণতন্ত্র মঞ্চ আজকে ভোটাধিকার রক্ষা, গণতান্ত্রিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করা, এই সরকারের বিদায়, নির্দলীয় অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে একটা গ্রহনযোগ্য নির্বাচন, বিদ্যুত,গ্যাস, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোসহ আমাদের ১৪ দফার দাবিতে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ দেশব্যাপী পদযাত্রা এবং গণসংযোগের কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করছি।

‘ঢাকাতে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় মিরপুর ১২ নম্বরে আমাদের পদযাত্রা শুরু হবে। সেখান থেকে আমরা পদযাত্রা ফার্মগেইট, শাহবাগ, পল্টন হয়ে মতিঝিলে গিয়ে শেষ করব। একই সঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চ জেলা ও বিভাগীয় পর্য়ায়েও এই কর্মসূচি করবে।

সরকারের উদ্দেশ্যে সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা সরকারকে পরিস্কার করে বলতে চাই, সিদাপথে যদি না হাটেন যে গণজাগরণ শুরু হয়েছে, এই গণজাগরণ দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। গণজাগরণ আরো জোরদার হবে এবং গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারকে গলায় গামছা লাগিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করব, দেশকে রক্ষা করব, জনগণকে রক্ষা করব।’

তিনি বলেন, ‘যেভাবে জনগণ রাজপথে নেমে আসতে শুরু করেছে। এই সরকারকে বিদায় না দিয়ে আর  ঘরে ফিরবে না, এই সরকারকে নাকে খত দিয়ে পদত্যাগ বাধ্য না করে এদেশের মানুষ আর কোনোভাবে ঘুমাতে যেতে পারে না। এই লড়াই গণতন্ত্র মঞ্চ অব্যাহত রাখবে।’

গণতন্ত্রের মঞ্চে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম, গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আপনাদের (সরকার) স্মার্টনেস মানে চাতুরি করা, আপনাদের স্মার্টনেস মানে মানুষের চোখে ধুলো দেওয়া, আপনাদের স্মার্টনেস মানে ভোট চুরি করে ইহা গণতন্ত্র এটা বাংলাদেশের মানুষকে বলা। সর্বশেষ উপনির্বাচনই তার প্রমাণ। কাজে উন্নয়ন ও স্মার্ট বাংলাদেশের শ্লোগানে জনগণ আর বিভ্রান্ত হবে না।’

বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, ‘এই সরকার বাংলাদেশকে তাদের পেয়ারা পাকিস্তানের সমপর্যায়ে নিয়ে গেছে। পাকিস্তান আইএমএফের থেকে ঋণ নিয়েছে। বাংলাদেশেও আইএমএফ থেকে ঋণ নিয়েছে।’

‘শেখ হাসিনা বাংলাদেশেকে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে আইএমএফের কাছে হাজির করেছে। আইএমএফের ঋণ নিয়ে তারা গর্ব করছেন-খুব ভালো কাজ করেছেন। আজকে আইএমএফের পরামর্শে এদেশের কৃষক শ্রমিক খেটে খাওয়া মানুষকে মরার জন্য তারা আজকে বার বার বিদ্যুতে দাম বাড়াচ্ছে, গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে এবং চালাকি করে বলছে যে, দাম বাড়ানো হচ্ছে না, দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। এই ভাওবাজী এই ভন্ডদের প্রতারণা আমাদের ধরতে হবে। আমরা ২০১৪ সালে ওদের ভন্ডামী ধরতে পারি নাই, ২০১৮ সালেও ধরতে পারি নাই, এবার আমরা ধরতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত বিরোধী দলকে যারা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন চান না তাদেরকে কমিটমেন্ট করতে হবে শেখ হাসিনার অধীনে কেউ নির্বাচনে যাবে না।”

‘যারা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে ভাসানীর মতো বলতে চাই তারা ঘু খাবে, তারা জাতীয় বেঈমান হবে, তারা জাতীয় কুলঙ্গার হবে। বিরোধী দলের স্পষ্ট দাবি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না।’

এছাড়া সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের পশ্চিম পাশে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমাবেশে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (মার্কসবাদী-লেলিনবাদী) সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, ফকিরেরপুল পানির ট্যাংকের কাছে ১২ দলীয় জোটের সমাবেশে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার এবং পুরানা পল্টনে প্রতিম ভবনের উল্টো দিকের সড়কে জাতীয়তাবাদী সমমনা দলের সমাবেশে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ যুগপত আন্দোলনের অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

টিএইচ