সরকারের পদত্যাগের এক দফা ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবিতে টানা কর্মসূচি চালিয়ে আসা বিএনপি ফের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আজ রোববার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, আগামী ১২ ডিসেম্বর সকাল ৬ টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত অবরোধ পালিত হবে। যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সমমনা দল ও জোটের উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হবে বলে জানান রিজভী।
খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এই কর্মসূচি পালিত হবে।
এছাড়া ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের দিন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সব কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হবে। একইসঙ্গে ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষ্যে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত থাকবেন। সাভার থেকে ফিরে একইদিন শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর মাজার জিয়ারত করা হবে। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে আলোচনা করা, কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সব কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, আজকে সরকার ভেবেছিল হামলা মামলা ও গ্রেফতারে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে স্তব্ধ করে দিবে। কিন্তু না জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বুক চিতিয়ে অংশগ্রহণ করেছে। তারা সমস্ত ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সারাদেশে মানবাধিকার দিবসে মানববন্ধনে জড়ো হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ রোববার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে পুলিশ হবিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে অনেককে আহত করেছে। শুধু কি তাই সারাদেশে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিচ্ছে। নেতা-কর্মীদের আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে। যাতে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া যায়। আজকে সরকার শুধু আওয়ামী ময় দ্বিতীয় বাকশাল কায়েম করতে চান।
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন নিজেদের মতো করার জন্য সরকার দেশব্যাপি কবরের শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে। নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চায় সরকার। সেজন্য তারা কবরস্থানের মতো নিস্তব্ধতা জারি রাখতে চায়। ৭ জানুয়ারি লোক দেখানো প্রহসনের নির্বাচন করতে চায়।
তবে এবার প্রহসন ও জালিয়াতি করা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না সরকার। আজকে গণতান্ত্রিক বিশ্ব ও দেশের জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। অন্যদিকে সরকার জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছে বলে যে, বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে নাকি অযাচিত হস্তক্ষেপ হচ্ছে!
তিনি বলেন, আজকে দেশের মানুষকে ভোট থেকে দূরে রেখে জালিয়াতির নির্বাচন করছে সরকার। এতোবড় নৈতিক অনাচার পৃথিবীর কোথাও কেউ করেছে বলে জানা নেই। সমস্ত নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায় সরকার। মাঝে মাঝে তারা উন্নয়নের মায়াজাল তৈরি করে। জনসমর্থন তারা জাদুঘরে পাঠিয়ে জনপ্রশাসন, পুলিশ ও সবকিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। ফলে পৃথিবীর সব স্বৈরশাসকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক।
রিজভী বলেন, আজকে দেশে পেঁয়াজের কেজি কতো? প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী কি জানেন? আসলে দেশের মানুষ বাঁচলো না মরলো সেদিকে তাদের নজর নেই। তাদের নজর অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখল করে রাখা।
এআরএস