আইনের মাধ্যমে আ. লীগ নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া ইতিবাচক মনে করে বিএনপি

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ১১, ২০২৫, ১২:০০ পিএম
আইনের মাধ্যমে আ. লীগ নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া ইতিবাচক মনে করে বিএনপি

ছাত্র-জনতার দাবির মুখে জুলাই গণহত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও এর নেতাকর্মীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত দলটির সব ধরনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনীতেও উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন দিয়েছে।

শনিবার (১০ মে) রাতে যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে রাত ১১টার দিকে এক ব্রিফিংয়ে এ সিদ্ধান্ত বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী আনার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিএনপি।

দলটি মনে করছে, এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলকে শাস্তি দেওয়া যাবে।

গতকাল শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আদালতের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাতে সম্মত থাকবে বিএনপির। এ ছাড়া দলটির নেতারা বলছেন, একমাত্র বিএনপি আইন-আদালতের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিচার চেয়েছে। দেরি হলেও সরকার সেই পথে এগিয়েছে।

নিষিদ্ধ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের বিচার কত দিন চলবে প্রশ্ন রেখে বিএনপির এক নেতা বলেন, বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে বুঝলাম।

এই বিচার করতে কতদিন লাগবে? এটা তো বলেনি সরকার। তাহলে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত কি নির্বাচনও হবে না? ছাত্ররা যদি এমন দাবি তোলে যে বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না। তাহলে কি সরকার তাও মেনে নেবে। ওই অবস্থায় যদি বিএনপি নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে নামে তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। এই অবস্থায় আগামীর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে সরকার তার স্পষ্ট অবস্থান না জানালে নির্বাচন নিয়ে ধোয়াশা আরো বাড়বে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি লিখিতভাবে, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে বিচারের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিল।

এ বিষয়ে শুক্রবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সরকার চাইলে আইন-আদালতের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীসহ ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে  তিন দিন ধরে টানা কর্মসূচি পালন করে। তবে এই আন্দোলনে অংশ নেয়নি বিএনপি। তবু চাঙ্গা হয়ে উঠে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে করা এ আন্দোলন। এমন পরিস্থিতিতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রাত সাড়ে ১০টায় এই বৈঠকটি শুরু হয়ে গভীর রাতে শেষ হয়।

স্থায়ী কমিটির বৈঠক সূত্র জানায়, বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা মনে করেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আন্দোলন এবং সরকারের সিদ্ধান্ত ‘ফ্রেন্ডলি ম্যাচের’ মতো। কারণ, নাগরিক পার্টি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা দল। অবশ্য, গতরাত পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে বিএনপি আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

বিআরইউ