মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ থাকা ব্যক্তিদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
সোমবার দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং ২০২৪—এই তিনটি সময়কালকে যথাযথ স্বীকৃতি ও মর্যাদা দেওয়া রাজনীতি করার পূর্বশর্ত। একাত্তরে যারা এই জনপদের জনগণের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন এবং গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে, তাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়—তারা যেন নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেন। একইসঙ্গে জাতীয় ঐক্য ও ২০২৪ সালের অভ্যুত্থান-প্রসূত জনআকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানায় দলটি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে দলটির বিরুদ্ধে দলগত বিচারের বিধান সংযোজন এবং জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে যে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলছে, তাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছে।
তবে, একটি পক্ষ দলীয় স্লোগান এবং জনগণের ইতিহাসবিরোধী বক্তব্য দিয়ে এই আন্দোলনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করে এনসিপি। দলটি স্পষ্ট জানায়, তাদের কোনো সদস্য এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত নয় এবং যেসব আপত্তিকর স্লোগান নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, তার দায় সংশ্লিষ্ট পক্ষকেই নিতে হবে। এনসিপিকে এর সঙ্গে জড়ানো সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত।
বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়, আন্দোলন চলাকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশনে এক পক্ষ আপত্তি জানালেও এনসিপি সংশ্লিষ্ট আন্দোলনকারীরা জাতীয় সংগীত দৃঢ়তার সঙ্গে পরিবেশন করেছেন।
এনসিপি মনে করে, ফ্যাসিবাদী শাসনমন্ত্রে নিপীড়িত জনগণ চব্বিশের অভ্যুত্থানে যে ভূমিকা রেখেছে, নতুন বাংলাদেশের পথে তাদের 'বাংলাদেশপন্থি' ভূমিকা আরও শক্তিশালী করতে হবে। অতীতের বিভাজন ও মতাদর্শগত অবস্থানের কারণে যে অনৈক্য তৈরি হয়েছিল, তা নিরসনে সংশ্লিষ্টদের উচিত নিজেদের অবস্থান জনসম্মুখে ব্যাখ্যা করা এবং বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের পথে অগ্রসর হওয়া।
বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়, বাংলাদেশের জনগণের ঐক্যই কেবল মুজিববাদকে পরাস্ত করার একমাত্র কার্যকর পথ বলে মনে করে এনসিপি।
ইএইচ