কোরবানীর পশুর বয়স ও গুনাগুন

আমারসংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২২, ০৬:২৪ পিএম
কোরবানীর পশুর বয়স ও গুনাগুন

কোরবানির জন্য পশুর নির্ধারিত বয়স ও গুণাগুণ নির্ধারণ করেছে ইসলাম। নির্দিষ্ট সংখ্যক পশু দিয়েই এ কোরবানি দিতে হয়। এ সবের মধ্যে রয়েছে উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। কোরআনুল কারিমের ভাষায় এ সব পশুকে ‘বাহিমাতুল আনআম’ বলা হয়। বিশুদ্ধ কোরবানির জন্য পশুর বয়স ও কিছু গুণাগুণ নির্ধারিত আছে। সেগুলো কী?

কোরবানির নির্ধারিত দিনগুলোতে যেসব পশু জবাই করা হয় হাদিসের পরিভাষায় এগুলোকে বলা হয় উজহিয়া। চাই তা উট-উষ্ট্রী, গরু-গাভী-ষাড়, ছাগল-ভেড়া-দুম্বা যা-ই হোক না কেন। এসব পশু কোরবানির জন্য বিশেষ কিছু গুণাগুণ থাকা জরুরি। তাহলো-

কোরবানির পশুর গুণাগুণ

কোরবানির পশু সব ধরনের শারীরিক ত্রুটিমুক্ত হওয়া জরুরি। গুণগত দিক থেকে সর্বোত্তম হলো-

> পশুটি দেখতে হবে সুন্দর;

> নিখুঁত বা দোষত্রুটি মুক্ত;

> অধিক গোশত সম্পন্ন এবং

> হৃষ্টপুষ্ট। এক কথায় প্রথম দেখায় যা পছন্দ হয়ে যায়।

কোরবানির পশু দোষ-ত্রুটিমুক্ত হওয়ার জন্য নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশনাও রয়েছে। হাদিসে এসেছে-

হজরত বারা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে দাঁড়ালেন আর আমার হাত তাঁর হাতের চেয়েও ছোট, তারপর বললেন, ৪ ধরনের পশু, যা দিয়ে কোরবানি করে তা জায়েজ হবে না। তাহলো-

১. অন্ধ : যে গরু চোখে দেখতে পায়  না ।

২. রোগাগ্রস্ত : রোগ-বালাইয়ে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট।

৩. পঙ্গু : যে পশু হাটাচলা করতে পারে না।

৪. আহত : যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে তা স্পষ্ট।

হাদিস গ্রন্থ নাসাঈতে ‘আহত পশুর স্থলে ‘পাগল’উল্লেখ করা হয়েছে। (তিরমিজি, নাসাঈ) হাদিসের অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, এ সব পশু দ্বারা কোরবানি করলে তার কোরবানি পরিপূর্ণ হবে না।

তাই পশু কেনার সময় উল্লেখিত বিষয়গুলো খেয়াল করতে হবে। যাতে কোনো ভাবেই হাদিসে নিষেধ এমন পশু কোরবানির জন্য ক্রয় করতে না হয়।

কোরবানির পশুর বয়স

ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে কোরবানির পশুর বয়সের দিকেও বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। আর তাহলো-

১. উট : কোরবানির সময় উটের বয়স ৫ বছর হতে হবে। সহজে উট বা উষ্ট্রী পাওয়া গেলে তা যেন ৫ বছরের নিচে না হয়।

২. গরু-মহিষ : কোরবানির সময় গরু বা মহিষের বয়স ২ বছর হতে হবে।

৩. ছাগল, ভেড়া, দুম্বা : কোরবানির জন্য ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার ১ বছর বয়সের হতে হবে।

তবে কোনো পশু যদি দেখতে ৫, ২ ও ১ বছর বয়স না হয়; কিন্তু দেখতে ৫, ২ ও ১ বা তার চেয়েও বেশি বলে মনে হয়। অর্থাৎ দেখতে নাদুস-নুদুস হয় তবে ওই পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে।

একান্তই যদি উল্লেখিত বয়সের কোনো পশু পাওয়া না যায়; তবে সে ক্ষেত্রে এরচেয়েও কম বয়সী পশু দ্বারা কোরবানি করা যাবে। হাদিসে এসেছে-

হজরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা অবশ্যই মুসিন্না (নির্দিষ্ট বয়সের পশু) কোরবানি করবে। তবে তা তোমাদের জন্য দুষ্কর (পাওয়া কষ্টকর) হলে ছয় মাসের মেষশাবক কোরবানি করতে পারবে। (মুসলিম)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ভালবাসা অর্জনে ইসলামি শরিয়ত নির্ধারিত সুন্দর, উত্তম ও নির্ধারিত বয়সের পশু কোরবানি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আরইউ