কোরবানির আগে চুল-নখ কাটা যাবে?

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৫, ১২:০৯ পিএম
কোরবানির আগে চুল-নখ কাটা যাবে?

কোরবানি মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আর এই ইবাদতের আগেই রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত ও মোস্তাহাব নিয়ম, যা অনুসরণ করলে কোরবানির তাৎপর্য ও সওয়াব আরও বহুগুণে বেড়ে যায়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোরবানি দেওয়ার নিয়ত করে, সে যেন জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে কোরবানি না দেওয়া পর্যন্ত চুল ও নখ না কাটে।’ —(সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৯৭৭)

অর্থাৎ, কোরবানির নিয়ত থাকলে জিলহজ মাস শুরু হওয়ার পর থেকে কোরবানি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত মাথা বা শরীরের চুল, নখ কিংবা শরীরের অতিরিক্ত লোম না কাটাই সুন্নত। এটি মূলত এক ধরনের আত্মসংযম ও আল্লাহর আদেশ মানার প্রস্তুতি।

কারা এই নিয়মে পড়বেন?
এই বিধান কেবল সেই ব্যক্তি বা নারীর জন্য, যিনি নিজের পক্ষ থেকে কোরবানি দেবেন।যাদের পক্ষ থেকে কোরবানি দেওয়া হবে (যেমন বাবা পরিবারে কোরবানি দিচ্ছেন, সন্তান নয়)—তাদের ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য নয়।

যিনি শুধু পশু জবাইয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন, তাঁর ক্ষেত্রেও নয়।

নিষিদ্ধ নয় যেগুলো:
অনেকের ধারণা, এই সময়ে স্ত্রী সহবাস, সুগন্ধি ব্যবহার বা নতুন পোশাক পরা নিষিদ্ধ—এটা ভুল। এসব কিছু জায়েয ও বৈধ। কেবল চুল, নখ, বগল বা শরীরের পশম কাটা থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়েছে।

কোরবানি না করলেও পালন করা যায়?
ইচ্ছা থাকলেও আর্থিক কারণে যাঁরা কোরবানি দিতে পারছেন না, তাঁরাও যদি এই সুন্নত পালনে আগ্রহী হন, তবে সওয়াবের আশায় এই সময়টুকু চুল ও নখ না কাটলে আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কার আশা করা যায়।

নারী কি এই নিয়মে পড়েন?
হ্যাঁ, কোরবানিদাতা নারীও এই বিধানের আওতায় পড়েন। তিনি বিবাহিত বা অবিবাহিত যেই হোন না কেন, যদি নিজে কোরবানি দেন, তাহলে তাঁরও এই সময়টিতে চুল–নখ না কাটাই উত্তম।

সৌদি আরবের প্রখ্যাত আলেম শাইখ ইবনে বায (রহ.) বলেন, ‘চুল ও নখ না কাটার হুকুমটি শুধুমাত্র সেই কোরবানিদাতার জন্য, যিনি নিজের অর্থে পশু ক্রয় করে কোরবানি করবেন। বাকিদের জন্য তা প্রযোজ্য নয়।’ (ফতোয়ায়ে ইসলামিয়া: ২/৩১৬)

কোরবানি শুধু পশু জবাইয়ের আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং তা আত্মার পরীক্ষা—আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের নিদর্শন। তাই কোরবানির আগে সুন্নত আমলগুলো মানা উচিত আন্তরিকতার সঙ্গে।

বিআরইউ